এনবিটিভি ডেস্ক: কলকাতার ঐতিহ্যবাহী প্রখ্যাত হাসপাতাল ইসলামিয়া-র দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী এবং কলকাতা পুরসভার প্রধান প্রশাসক জনাব ফিরহাদ হাকিম। তিনি ইসলামিয়া হাসপাতালের দীর্ঘদিনের সভাপতি জনাব মারুফ সাহেবের স্থলাভিষিক্ত হলেন। ইসলামিয়া হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল আহমেদের জায়গায় এসেছেন জনাব এস এম হায়দার। তাঁরা অসুস্থ থাকায় তাঁদেরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
৪৭-এ স্বাধীনতার প্রায় ৪২ বছর আগে কলকাতায় বেশ কিছু সমাজসেবী ও ধনাঢ্য মুসলিমের চেষ্টায় গড়ে ওঠে ইসলামিয়া হাসপাতাল। এটাই ছিল, কলকাতায় মুসলমানদের গড়া প্রথম হাসপাতাল। তবে নাম ইসলামিয়া হলেও এখানে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকলেরই চিকিৎসা হত। এই ধারা এখনও বহমান। আর এখানে হিন্দু-মুসলিম সকল ধর্মেরই ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা প্রথম থেকেই কর্মরত রয়েছেন। এই হাসপাতালের ব্যয়ের বেশিরভাগই আসে যাকাত ও সদকা থেকে।
রবিবার এক বৈঠকের পর ইসলামিয়া হাসপাতাল পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকে নতুন সভাপতি ও কার্যবাহী সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।
ইসলামিয়া হাসপাতাল গোটা রাজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনুভূত হতে থাকে, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউতে যে জায়গায় হাসপাতাল রয়েছে, সেখানে বহুতল নির্মাণ করে আরও কয়েকশত রোগীকে স্থান দেওয়া সম্ভব। এ ছাড়া হাসপাতালটির আধুনিকীকরণ করলে নানা ধরনের অস্ত্রোপচার এবং জটিল রোগেরও চিকিৎসা সম্ভব। আর তাই সাংসদ জনাব সুলতান আহমদের উদ্যোগে এই হাসপাতালটিকে বহুতলে পরিণত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরবর্তীতে অবশ্য সুলতান সাহেবের ইন্তেকাল হয়।
কলকাতার ব্যস্ততম এলাকা ৭৩ সি আর অ্যাভনিউতে অবস্থিত এই হাসপাতালটিকে ভেঙে দিয়ে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হিসাবে গড়ে তোলার জন্য নতুন নির্মাণের কাজ চলছে। বহুতলের কাঠামো নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বছর কয়েক ধরে এই হাসপাতালের উন্নয়নে যে কাজ চলছে, তাতে জনাব ফিরহাদ হাকিমের আগমন নতুন মাত্রা পাবে বলে আশা করছেন সবাই। কারণ ফিরহাদ হাকিম বহু উন্নয়ন কাজের সফল আনজাম্ দিয়েছেন। বর্তমানে এই হাসপাতালের কাজ যাতে দ্রুত সমাপ্ত হয়, সেই লক্ষ্যে নয়া সভাপতি আরও এগিয়ে যাবেন বলে আশা করছে পরিচালন কমিটি।
নয়া কার্যবাহী সম্পাদক এস এম হায়দার আগেও ১৯৯৬ সাল থেকে ইসলামিয়ার জেনারেল সেক্রেটারি ও মাঝে তিন বছর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আগে যাঁরা সদস্য ছিলেন, তাঁরা বহাল রয়েছেন। তাতে কোনও পরিবর্তন হয়নি।
এক প্রতিক্রিয়ায় জনাব ফিরহাদ হাকিম জানান, কলকাতা ইসলামিয়া হাসপাতাল ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। এখানে গোটা বাংলা থেকে যেমন লোকেরা নানা রোগের চিকিৎসা করাতে আসেন, তেমনি, ঝাড়খণ্ড ও বিহার থেকেও অনেকে চিকিৎসা নিতে হাজির হন। আমি এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ দায়িত্ব পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। কোনও মানুষ যাতে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে না যান, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাবো। তিনি আরও বলেন, কমিটির সদস্যরা অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি। তাদের পরামর্শ নিয়ে হাসপাতালটির আধুনিকীকরণে যাবতীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া একটি মানবিক কাজ। ইসলামিয়ায় সকলের চিকিৎসা পাওয়ার হক রয়েছে।’
ইসলামিয়া হাসপাতালের সদস্য ইসতিয়াক আহমেদ রাজু বলেন ফিরহাদ হাকিম সভাপতি হিসাবে এসেছেন। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। তাঁর হাত ধরে নতুনভাবে গড়ে উঠবে ইসলামিয়া হাসপাতাল এবং দ্রুত আধুনিকীকরণের কাজ শেষ হবে।
সৌজন্যে: পুবের কলম পত্রিকা