বিভেদের রাজনীতি করার জন্য জাগদীপ ধনকাড় কে অপসারণের জন্য রাজ্যের চিঠি রাষ্ট্রপতিকে

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG_20201230_140603

সাইফুল্লা লস্কর : কেন্দ্র এবং রাজ্যের সম্পর্ক পর্যালোচনা এবং তা উন্নত করার পন্থা সন্ধানের জন্য গঠিত সারকরিয়া সরকারের কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছিল, রাজ্যপালের সাংবিধানিক পদে এমন কোন ব্যাক্তিকে নিয়োগ করা প্রয়োজন যার সঙ্গে বহুদিন রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। যিনি সামাজিকভাবে অত্যান্ত নিরপেক্ষ ব্যাক্তি। কংগ্রেসের আমল থেকে সেই প্রথাই বজায় রাখা হয়েছিল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। কিন্তু মোদী জমানায় এর সম্পূর্ণ বিপরীত প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এমন সব ব্যক্তিদেরকে রাজ্যপালের পদে আসীন হতে দেখা গেছে যারা বিজেপির রাজনৈতিক মতাদর্শের সক্রিয় সমর্থক এবং কর্মী ছিলেন এবং রাজ্যপালের পড়ে বসার পরও তাদের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিয়ে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। বহু উদাহরণ সামনে রয়েছে কিন্তু তার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য আমাদের পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের পদে নিযুক্ত হবার পর থেকেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাকে বিবাদে জড়াতে দেখা গিয়েছে। সেই অভিযোগেই তার অপসারণ চেয়ে ৫ তৃণমূল সাংসদ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দকে একটি চিঠি লিখেছেন।

তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু শেখর রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

স্মারকলিপিতে সরাসরি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিভেদের রাজনীতি করার অভিযোগ এনেছেন তৃণমূল সাংসদরা। তাঁরা লিখেছেন, “কেন্দ্র ও রাজ্য ক্ষমতাসীন দুই দল একে অপরের বিরোধী। শুধুমাত্র এই কারণে রাজ্যপাল রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে বিভেদের রাজনীতি করছে। উনি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান পদে রয়েছেন, তাই তিনি রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকবেন বলেই আশা করা যায়।” স্মারকলিপিতে  রাজ্যপালের ব্যবহৃত কিছু শব্দ, টুইট, সাংবাদিক সম্মেলনেরও উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শাসকদল তৃণমূলকে অপমান করেছেন বলে অভিযোগ সাংসদদের। এমনকী, তাঁর বিরুদ্ধে সংবিধানের সীমারেখা লঙ্ঘনেরও অভিযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা যখনই বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন তখনই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। শুধু তৃণমূল নয় অনেক ক্ষেত্রে বাম দল করি এবং কংগ্রেস রাজ্য সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বারবার। প্রতিবাদে সরব হয়েছে বহু বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক সাহিত্যিক। কিন্তু নিজের স্বাভাবিক ছন্দ থেকে কখনোই সরে যাননি রাজ্যপাল। বার বার তাকে বিজেপির প্রাদেশিক সভাপতি বলে কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হয়েছে। এবার সরাসরি তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কাছে নালিশ কোন পরিণতি ডেকে আনবে সেটাই এখন দেখার। তবে ওয়াকিবহাল রাজনৈতিক মহলের তরফ থেকে বলা হচ্ছে যেহেতু রাজ্যপালের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মোদি সরকার নেবে এবং মোদি সরকার রাজ্যপালের এই ভূমিকায় নারাজ তো নয়ই বরং তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে তিনি সুবিধাজনক কাজ করে যাচ্ছেন ফলে তার কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তাকে অপসারণ এর প্রশ্নটা প্রত্যাশিত নয়।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর