গান্ধীজির দেশে গান্ধী হত্যাকারী গডসের পূজার পর তার নামে লাইব্রেরী খুলল হিন্দুত্ববাদীরা, উদ্দেশ্য তাকে দেশপ্রেমী প্রমাণ

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG_20210111_131414

সাইফুল্লা লস্কর : : গত শতাব্দীর সবথেকে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদি এবং ভারতের স্বাধীনতার রূপকার মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী আরএসএসের কর্মী হিন্দুত্ববাদীদের আইডল নাথুরাম গডসের নামে এবার লাইব্রেরী খুলল বিজেপির “সিস্টার অরগানাইজেশন” হিন্দু মহাসভা। এই কুখ্যাত হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী গডসে আদতে যে কত বড় দেশপ্রেমিক ছিলেন এবং গান্ধীজিকে হত্যা করে যে কতটা দেশসেবার কাজ করেছিলেন তাই প্রমাণ করার চেষ্টা হবে এই লাইব্রেরীতে থাকা পুস্তকের মাধ্যমে। গান্ধীজিকে হত্যা করার পরিকল্পনা আসলে করা হয়েছিল মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়ার শহরে। আর সেই জন্যই এই শহরেই তার নামে ইতিপূর্বে একটি মূর্তি তৈরি করেছিল এই সংগঠন। সেই মূর্তিতে পূজা করা শুরু করেছিল এই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি। এবার তারা খুলল গ্রন্থাগার। সেই শহরেই মহাত্মা গান্ধীর কৃত্রিম পূত্তলিকাতে গডসের মতো পিস্তলের গুলি করেছিলেন বর্তমান ভারতের দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল বিজেপির গর্বিত সাংসদ এবং মালেগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার অভিযুক্ত প্রজ্ঞা ঠাকুর।

১৯৪৮ সালের ২রা অক্টোবর স্বাধীন ভারতে সবার নয়নের মনি মহাত্মা গান্ধীকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করেন এই সন্ত্রাসী। এত ঘৃণ্য অপরাধ করার পরও এই সন্ত্রাসীকে ফাঁসির দড়ি পর্যন্ত নিয়ে যেতে বাধা দিয়েছিলেন বহু হিন্দুত্ববাদীরা, যারা আজ দেশপ্রেমের বুলি আওড়ানো বিজেপির মহাপুরুষ। মহাত্মা গান্ধীকে যে পিস্তল দিয়ে হত্যা করেছিলেন গেরুয়া সন্ত্রাসী গডসে তেমনই এক পিস্তল কিনে গোয়ালিয়ার শহরে রেখেছে হিন্দু মহাসভা। এভাবেই তারা জাতির রূপকার কে অপমান করে জাতির কলঙ্ক কে মহিমান্বিত করার চেষ্টা করছে। দেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক ব্যাবস্থা আজ বিজেপির কুক্ষিগত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলেই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।

বিজেপি সগর্বে বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বা হিন্দু মহাসভার মত সংগঠনগুলিকে নিজেদের সিস্টার অরগানাইজেশন বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু কথায় কথায় বিরোধী এবং মোদির সমালোচকদের দেশদ্রোহী, পাকিস্তানি ও মাওবাদী ঘোষণা করা বিজেপি আমেরিকা ঘোষিত সন্ত্রাসবাদি সংগঠন হিন্দু মহাসভার এই কার্যকলাপে নীরব ভূমিকা পালন করছে।

তবে ভারতের গেরুয়া শিবিরের হিন্দুত্ববাদীদের স্বাধীনতার আদর্শ বিরোধী এমন সব আচরণ আজ নতুন নয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতবর্ষে ৫২ বছর নিজেদের জাতীয় হেডকোয়ার্টারে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বর্তমান বিজেপির মস্তিষ্ক এবং আজ দেশপ্রেমের সার্টিফিকেট বিতরণ করার শীর্ষ সংগঠন আরএসএস। প্রাথমিক অবস্থায় ভারতের তিরঙ্গা পতাকাকে ও গ্রহণ করতে রাজী হয়নি তারা। সংবিধানের মৌলিক ধারণা অধিকার এবং দেশ ও জাতির সাংবিধানিক পরিভাষকেও মান্যতা দেয়নি এ সংগঠনটি। স্বাধীনতার পূর্বেও আরএসএসের প্রাণপুরুষ সাভারকার গোলওয়ালকরের মতো নেতারা ও ব্রিটিশদের চামচাগিরি করে নিজেদের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে দূরে রেখে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বাধা দেওয়ার প্রচেষ্টা করেছিলেন বহুবার।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর