এভাবে তো বিজেপি ১০০ পার হবে না, দিল্লির বৈঠকে বিস্ফোরক মন্তব্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

pm_modi_amit_shah_650_ap_635807677867135420

নিউজ ডেস্ক : আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্যে বিজেপির জনসভা গুলিতে আচমকাই ভাটা পড়তে শুরু করেছে গত কয়েক সপ্তাহে। তার ওপরে শুরু হয়েছে গোষ্ঠী কোন্দল এবং প্রকাশিত প্রার্থীদের নাম নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। সেই কারণে দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে রাজ্য বিজেপির উচ্চ স্তরের নেতা দিলীপ ঘোষ রাহুল সিনহা মুকুল রায় দেন বৈঠকে উদ্বেগের সুর শোনা গেছে। বিজেপির নির্ভরযোগ্য এবং ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে কেন্দ্রীয় স্তরের নেতারা বলছেন এভাবে চলতে থাকলে রাজ্যের নির্বাচনে বিজেপিই ১০০ টি আসন ও পাবে না। কেন নির্বাচনী জনসভা গুলিতে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব যথেষ্ট পরিমাণ লোক সমাগম করতে পারছেন না সে ব্যাপারে বারবার প্রশ্ন তোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যে সমস্ত জায়গায় বিজেপির প্রার্থীদের মনোনয়নের সমস্যা তৈরি হয়েছে সেসব জায়গায় রাজ্য নেতৃত্ব কেন ব্যর্থ হচ্ছে তা নিয়েও তিনি তুলোধোনা করেন রাজ্য নেতৃত্বকে। রাজ্যে বিজেপির জয় নিশ্চিত করার জন্য যা কিছু করার সব করতে হবে বলে সুস্পষ্টভাবে দিলীপ ঘোষ এবং মুকুল রায় কে জানিয়ে দেন অমিত শাহ। স্বভাবতই তার কথায় হতাশার সুর বেশি শোনা গিয়েছে।

জানা গিয়েছে, প্রকাশিত প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে ৯টি নাম। যার মধ্যে আছেন ক্যানিং পশ্চিম, রায়দিঘি সহ হুগলী এবং হাওড়ার জন্যে নির্ধারিত একধিক কেন্দ্রের প্রার্থীও। সূত্রের দাবি, সিঙ্গুর থেকে সরানো হতে পারে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, হাওড়া দক্ষিণ থেকে রন্তিদেব সেনগুপ্ত এবং উত্তরপাড়া থেকে সরানো হতে পারে প্রবীর ঘোষাল কেও।

উল্লেখ্য, রাজ্যে আচমকাই বিজেপির জোয়ারে যেন ভাটার টান দেখা দিয়েছে। লক্ষণীয় ভাবে ভিড় কমছে সভা সমিতিগুলোতে। হেস্টিং অফিসে একদিকে যখন নব্য বিজেপির বিরুদ্ধে আদি বিজেপি বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে তখন অন্যদিকে জেলায় জেলায় প্রার্থী নিয়ে চলছে বিক্ষোভ। শুধু হুগলী জেলাতেই ১৮ টি আসনের মধ্যে ১০ টি আসনে নির্দল প্রার্থী দিচ্ছে আদি বিজেপি। শুরু হয়েছে নির্দলের পক্ষে দেওয়াল লিখন। একই ছবি হাওড়াতে। হাওড়া দক্ষিণ, আমতা, উলুবেড়িয়া পূর্বে প্রার্থী না বদলালে আদি বিজেপি নোটায় ভোট দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল একই দিকে যোগী আদিত্য নাথ এবং জেপি নাড্ডার জনসভায় তেমন ভাবে ভিড়ই হয়নি। অপমানিত যোগী সভাস্থলে এসে হাজার দেড়েক লোক দেখে ব্যাক্সটেজে বিশ্রাম নিতে শুরু করেন! সেই বিশ্রাম চলে পাক্কা দেড় ঘন্টা। আর দেড় ঘন্টায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক নিয়ে সভাস্থলে হাজার পাঁচেক লোক জড়ো করতে সমর্থ হন বিজেপি নেতারা, বিশ্রাম ছেড়ে ভাষণ দেন যোগী। একই ছবি ধরা পড়ল বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার বিষ্ণুপুরের সভায়। বাঁকুড়ার এই গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ফাঁকা মাঠেই বক্তব্য রাখতে হয়েছে বিজেপির এই শীর্ষ নেতাকে। কেন এমন হচ্ছে? তা বঙ্গ বিজেপির থেকে জানতে চেয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। অন্যদিকে রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার দ্বারা পরিচালিত জনমত সমীক্ষা গুলিতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার তৈরি করার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করতে যাচ্ছে যেখানে বিজেপি’র ১০০টির আশেপাশে আসলে দেখা যাচ্ছে। এ সমস্ত বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সে জন্য উপযুক্ত প্রার্থী না পাওয়ায় মুকুল রায় বাবুল সুপ্রিয় দের নেতাদেরকে আবার নির্বাচনী ময়দানে নামাচ্ছে বিজেপি। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে মুকুল রায় বিজেপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন তার বয়স এবং শারীরিক অসুস্থতার দোহাই দিয়ে কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব করেনি। শুভেন্দু অধিকারী ও নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসন থেকে লড়তে চাননি বলে জানা গেছে। বিষয়টি আরো পরিষ্কার হয় যখন শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী বলেন আমার ছেলের রাজনৈতিক জীবন শেষ করার জন্য মমতা ব্যানার্জি নন্দীগ্রামের আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এসেছেন।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর