নিউজ ডেস্ক : ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাকিস্তানে ভারতের সেনাবাহিনীর দ্বারা পরিচালিত তথাকথিত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এর ব্যাপারে অত্যাধিক বাড়াবাড়ি করেছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু এই বাড়াবাড়িতে ভারতের আদতে কোন লাভ হয়নি বলে নিজের আত্মজীবনীতে মন্তব্য করেছেন প্রণব মুখার্জি। উল্লেখ্য এই তথাকথিত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এর দাবি বাড়িয়ে চড়িয়ে করা হয় মোদি সরকারের নেতা মন্ত্রীদের দ্বারা। দাবি করা হয় পাকিস্তানের ২০০ থেকে ২৫০ জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে এই স্ট্রাইকে। আর মেধাবীর রাজনৈতিক লাভ ও হয় বিজেপির পরবর্তী কিছু রাজ্য নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে। ২০১২ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে আসীন থাকা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আত্মজীবনী প্রকাশিত হতে চলেছে আগামী মাসে।
২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কোন পূর্বনির্ধারিত সফরসূচী ছাড়াই সদস্য প্রটোকল ভেঙে নওয়াজ শরীফের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হওয়া একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে হাজির হন, যা ভালো লাগেনি প্রণববাবুর। এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, “সেই সময় দু’দেশের সম্পর্কের নিরিখে মোদির পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়া একেবারে অযৌক্তিক। উল্লেখ্য, এই সফরের কিছুদিন পরেই পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলা হয়।”
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে মোদির ব্যক্তিগত সখ্যতা তৈরীর প্রচেষ্টাকে কটাক্ষ করেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। এ বিষয়ে প্রণববাবু লিখেছেন,”রাষ্ট্রনেতাদের ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের ঘোরবিরোধী আমি, কারণ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের পথে তা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। মোদি এ ধরনের সম্পর্ক নিয়ে অযথা বাড়াবাড়ি করেছেন।”
মোদির বিদেশনীতি নিয়ে প্রণববাবু লিখেছেন, “মোদি যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন সেই সময় বিদেশনীতি নিয়ে তাঁর কোনও অভিজ্ঞতাই ছিল না। তাই তিনি এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা তাঁর পূর্বসূরিরা ভাবতেও পারেননি। ২০১৪-য় নওয়াজ শরিফ-সহ সার্কের অন্তর্ভুক্ত এবং অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রনেতাদের নিজের শপথগ্রহণে ডেকেছিলেন মোদি। এই সিদ্ধান্তে স্তম্ভিত হয়ে যান কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও।”