স্ত্রী নির্বাচনের মাঠে নেমে আক্রান্ত হচ্ছেন স্বামীর দলের কর্মী সমর্থকদের হাতে, আর তা দেখে কার্যত খুশি স্বামী

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

soumitra-sujata

স্ত্রী নির্বাচনের মাঠে নেমে আক্রান্ত হচ্ছেন স্বামীর দলের কর্মী সমর্থকদের হাতে। আর তা দেখে কার্যত খুশি স্বামী। এই দুর্দিনে স্ত্রীর পাশে দাঁড়ানো তো দূ্রের কথা, উল্টে তাঁর প্রতিবাদকে তাঁর লড়াইকে ‘দাদাগিরি’ বলে দেগে দিলেন স্বামীদেবতা। চরম ন্যাক্কারজনক এই ঘটনাটাই ঘটিয়েছেন বিজেপির সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। এদিন তাঁর স্ত্রী সুজাতা খাঁ আরামবাগে দুই দফায় আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপির কর্মীসমর্থকদের হাতে। সেই ঘটনায় সুজাতার পাশে দাঁড়ানো তো দূর, উল্টে স্ত্রীর আচরণকে ‘দাদাগিরি’ বলে দেগে দিয়েছেন সৌমিত্র। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন টলি তারকা বনি সেনগুপ্তও। তাঁর বান্ধবী কৌশানী এবার তৃণমূলের প্রার্থী। সম্প্রতি তাঁরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ঘটনায় বনি কিন্তু কৌশানীর পাশে দাঁড়িয়ে কাঠগড়ায় বিজেপিকে তুলতে দ্বিধাবোধ করেননি। সৌমিত্র হাঁটলেন পুরো উল্টো পথে। কার্যত ছিঃ ছিঃ কার পড়ে গিয়েছে সৌমিত্রের এহেন ভূমিকা ও মন্তব্যে।

এদিন হুগলি জেলার আরামবাগের দুই জায়গায় আক্রান্ত হয়েছেন সুজাতা। প্রথমে ২৬৩ নম্বর বুথে ও পরে ২২৫ নম্বর বুথে। আরামবাগের পারুল গ্রামে ২৬৩ নম্বর বুথে এদিন সকাল থেকেই তৃণমূল এজেন্ট বসাতে পারেনি। কার্যত সকাল থেকেই তা চলে গিয়েছিল বিজেপির দখলে। বুথের ধারে কাছে মাড়াতে দেওয়া হচ্ছিল না ভোটারদের। বিশেষ করে সংখ্যালঘু ভোটারদের বুথের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। সুজাতা এদিন সেই সংখ্যালঘু ভোটারদের নিয়ে বুথের দিকে এগোতেই হামলার শিকার হন। বাঁশ দিয়ে তাঁর মাথা, পিঠ ও কোমরে আঘাত করা হয়। তাঁর নিরাপত্তারক্ষীও সেই সময় আক্রান্ত হন। এরপরে তিনি আবারও আক্রান্ত হন আরামবাগের ডিহিবাগানের ২২৫ নম্বর বথে। তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরে ইটবৃষ্টি করেন বিজেপির কর্মী ও সমর্থকেরা। কোথাও না পুলিশ না কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও সাহায্য তিনি এদিন পাননি। এর জেরেই সুজাতা অভিযোগ করেছেন, ‘বিজেপির কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় বাহিনি ও পুলিশ। স্থানীয় থানার আইসি পর্যন্ত বিজেপির দাসত্বগিরি করছে। বিজেপির হয়ে ভোট করাচ্ছে।’ সুজাতার এই অভিযোগের পরে নির্বাচন কমিশন ঘটনার রিপোর্ট তলব করলে জেলার পুলিশ সুপার রিপোর্ট দিয়েছেন, সুজাতা মণ্ডলকে লাঠি দিয়ে আক্রমণ করা হয়নি, কাদা ছোড়াছুড়ি করা হয়েছে। বস্তুত এদিন কিন্তু একাধিক টিভি চ্যানেলে বার বার দেখানো হয়েছে সুজাতার মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। তারপরেও জেলার পুলিশ সুপারের এই রিপোর্ট কার্যত বুঝিয়ে দিচ্ছে তাঁরা কতটা বিজেপির তাঁবেদারি করা শুরু করেছেন।

তবে সব থেকে বড় চমক এসেছে সুজাতার স্বামী সৌমিত্র খাঁয়ের দিক থেকে। তিনি সুজাতার পাশে দাঁড়ানোর থেকে উল্টে তাঁকে কাঠগড়ায় তুলতে ন্যাক্কারজনক বিবৃতি দিয়েছেন। বলেছেন, ‘এলাকার মানুষকে হুমকি দিয়েছেন সুজাতা। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই দেখা গিয়েছে পারুলে। জনগণ জেগে উঠেছেন। ১০ বছর ধরে ওই মানুষগুলো ভোট দিতে পারেননি। কোনও প্রার্থীকে এলাকার মানুষকে হুমকি দেওয়ার ক্ষমতা কে দিয়েছে? সুজাতা তৃণমূলের বুথ দখলের সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস করা একটা পাপ। সেটা সুজাতাই করুক বা অন্য কেউ। মানুষ এ বার পরিবর্তনের পরিবর্তন চাইছেন। তৃণমূল যা অত্যাচার করেছে, মানুষ আজ তার প্রত্যুত্তর দিচ্ছে। কোনও প্রার্থীরই উচিত নয় ভোটাররা কোথায় ভোট দেবে তা দেখতে যাওয়া। তাই সেখানে গিয়ে দাদাগিরি করব এটা কোনও প্রার্থীরই উচিত নয়, সুজাতারও উচিত হয়নি।’ সৌমিত্রের এহেন মন্তব্য নিয়েই এখন ছিঃ ছিঃ কার পড়ে গিয়েছে রাজ্য জুড়ে।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর