অযোধ্যায় ঘটে যাওয়া নির্মম অপরাধে দেশ উত্তাল। ২২ বছরের এক দলিত তরুণীকে ভাগবত পাঠে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ থাকতে দেখা যায় এবং পরদিন গ্রামের নালার তীরে তার বিবস্ত্র, ক্ষতবিক্ষত ও বাঁধামুক্ত দেহ উদ্ধার হওয়ায়, উত্তরপ্রদেশে নারী সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রতি প্রশ্ন ও কটাক্ষ তীব্র হয়েছে।
এই ভয়াবহ ঘটনার পর, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকে প্রশ্ন ওঠে—কেন বার বার অযোধ্যা সহ উত্তরপ্রদেশে এমন নৃশংস অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে? প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে জনগণ ও বিরোধী দলের নেতারা অভিযোগ করছেন যে, বিজেপি সরকার নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। বহু অভ্যন্তরীণ প্রতিবাদ ও পাশ্ববর্তী স্থানে ঘটে যাওয়া ঘটনার তুলনায় (যেমন দিল্লির নির্ভয়া, হাথরাস) স্পষ্ট যে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি শুধুমাত্র অযোধ্যার সমস্যায় সীমাবদ্ধ নয়।
সমাজবাদী পার্টির সাংসদ অবধেশ প্রসাদ, যিনি নিজের সংসদীয় এলাকার অযোধ্যার কথা তুলে ধরেন, কেঁদে বলেন—“ভগবান রামের জন্মভূমিতে এমন নির্মম অপরাধ ঘটলে যদি দ্রুত ও নিরপেক্ষ বিচার না হয়, তবে আমি আমার পদত্যাগের ঘোষণা দিতে বাধ্য হব।” তাঁর এই বক্তব্যে স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়েছে বিজেপি সরকারের নারী সুরক্ষা নীতির প্রতি অসন্তোষ ও কটাক্ষ। পাশাপাশি, অন্যান্য বিরোধী নেতাও প্রশ্ন তুলছেন, কেন উন্নত নাগরিক সুরক্ষার দাবির প্রেক্ষিতে উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
অযোধ্যার ক্যানেলের তীরে উদ্ধার হওয়া তরুণীর দেহে হাত-পা বাঁধা, নগ্ন অবস্থায় থাকায় পুলিশ ও পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে যে, প্রশাসনিক উদাসীনতা ও নিরাপত্তার তদারকির ঘাটতির ফলেই এই ভয়াবহ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে—নারী সুরক্ষার ক্ষেত্রটি কি কেবল আদর্শ নীতির নামে ঘোষিত, নাকি বাস্তবের মাটিতে তার সিকিভাগও কার্যকর হবে?
উত্তরপ্রদেশে বারবার অনুরূপ অপরাধের ঘটনা সমাজে অগণিত প্রশ্ন তোলে—সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কি যথাযথ ও স্বচ্ছ তদন্ত ও কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে? নির্বাচনী মঞ্চে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার মধ্যে, বিজেপি সরকারের উপর এই প্রশ্ন উঠছে যে, কিভাবে এবং কেন তাদের পরিচালিত নিরাপত্তা নীতি নারী সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখতে পারছে না।
বর্তমান পরিস্থিতি জনগণের মধ্যে উদ্বেগ ও অসন্তোষের স্রোত বয়ে আনতে বাধ্য করছে। প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের সড়কে ও গ্রামে নারীরা অদেও কি নিরাপদ? এবং এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত, রাজনৈতিক দলগুলোর ও প্রশাসনের উপর চাপ বাড়তে থাকবে, যাতে তারা নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।