আসাম বিধানসভার ১২৬ সদস্যের মধ্যে ৪০ জনই ‘অনুপ্রবেশকারী : হিমন্ত

৪০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে যে অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছিল, তার জেরে আজ আসাম বিধানসভার ১২৬ সদস্যের মধ্যে ৪০ জনই ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে মন্তব্য করেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী  হিমন্ত বিশ্বশর্মা।

বুধবার ঝাড়খন্ড রাজ্যের হাজারীবাগের বিজেপি প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনী প্রচারের পরে এক সংবাদ বৈঠকে বিশ্বশর্মা বলেন, আসামে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ শুরু হয় ৪০ বছর আগে। তখন ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। ৪০ বছর পর কী ঘটবে, তা তারা বুঝে উঠতে পারেনি। আসামে এখন অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা ১ কোটি ২৫ লাখ। এটি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অসমিয়ারা তাদের পরিচয় হারিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি ঝাড়খন্ডে দাঁড়িয়ে বলছি, আমাদের মতো ভুল করবেন না। আমরা ৪০ বছর আগে একটি ভুল করেছি, আমরা আমাদের সীমান্ত রক্ষা করিনি। আপনারা রোহিঙ্গাদের আসতে দেবেন না। পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম ভুল করেছে। সে সময় আমাদের যা করা উচিত ছিল, আমরা তা করতে পারিনি। সেই সময়, আমাদের নরেন্দ্র মোদি ছিলেন না…এখন মোদিজি ঝাড়খন্ডের সঙ্গে আছেন।’

হিমন্ত আরও বলেন, ‘অনুপ্রবেশকারীদের থামান, অন্যথায় ২০ বছরের মধ্যে ঝাড়খন্ডজুড়ে আদিবাসীরা সংখ্যালঘু হয়ে যাবে। এটাই আসামের পরিণতি এখন অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের বিধানসভায় ৪০টি আসন দখল করে নিয়েছে। তারা মন্ত্রী, স্পিকার, ম্যাজিস্ট্রেট, ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর হয়ে উঠেছে। আমরা এখন অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছি। আমরা প্রতিদিন লড়াই করছি।’

হিমন্ত বলেছেন, ‘হিন্দুদের ঠান্ডা হতে বলবেন না। এত বছর পর হিন্দুরা “জয় শ্রী রাম” স্লোগান দিচ্ছে। তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষরা আমাদের “জয় শ্রী রাম” বলতে বাধা দেয়। তারা কি নামাজ বন্ধ করতে পারে? ভারত হিন্দুদের জন্য! ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে যারা পাকিস্তানের জন্য করতালি দেয়, তাদের বিরুদ্ধে “জয় শ্রী রাম” বলতে হবেই।’

তার এই বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন  অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট এর সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

আমিনুল বলেন, ‘হিমন্তের কথাগুলো অসাংবিধানিক। তিনি মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর দল রাজ্য ও কেন্দ্রে ক্ষমতায় রয়েছে। বাংলাদেশি থাকলে তাঁরা কেন অলস হয়ে বসে আছেন, সেটা একটা প্রশ্ন। তাঁরা কেন ব্যবস্থা নিতে পারছেন না? এগুলো সবই নির্বাচনী বক্তৃতা। দুর্ভাগ্যজনক, মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসে একজন মানুষ এসব কথা বলছেন।’

আসাম কংগ্রেসের প্রধান ভূপেন বোরা বলেন, ‘একদিকে প্রধানমন্ত্রী টিভিতে কাঁদছেন আর বলছেন, তিনি হিন্দু-মুসলিম করেন না। আর এখন আমাদের অঞ্চলে হিন্দু-মুসলিম মেরুকরণ তুঙ্গে উঠেছে। বিজেপি ১০ বছর ধরে এই ধরনের মেরুকরণের মাধ্যমে সুবিধা পেয়েছে। তাই তারা এর ওপর আরও জোর দিচ্ছে।’

শিবসাগরের বিধায়ক ও স্থানীয় রাইজ’র দলের নেতা অখিল গগৈ বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আসামের মুখ্যমন্ত্রী এখন দেশের সবচেয়ে সাম্প্রদায়িক এবং মৌলবাদী বক্তৃতা দিচ্ছেন। দয়া করে এভাবে রাজ্যের মানুষকে অপমান ও অসম্মান করবেন না।’

Latest articles

Related articles