
সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার ওয়াকফ (সংশোধন) আইন, ২০২৫ এর বৈধতা নিয়ে নতুন পিটিশন শুনতে অস্বীকার করেছে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, ৭০টিরও বেশি পিটিশনের মধ্যে শুধু পাঁচটি নির্বাচিত পিটিশনের শুনানি হবে। পিটিশনকারী মোহাম্মদ সুলতানকে অতিরিক্ত যুক্তির জন্য ইন্টারভেনশন আবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, “পিটিশনের সংখ্যা বাড়ালে পরিচালনা কঠিন হবে।”
গত ১৭ এপ্রিল আদালত পাঁচটি পিটিশনে শুনানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ৫ই মে পরবর্তী শুনানিতে পিটিশনকারীদের প্রাথমিক আপত্তি ও অন্তর্বর্তী স্বস্তির আবেদন বিবেচনা করা হবে। কেন্দ্র আশ্বাস দিয়েছে, ৫ মে পর্যন্ত ওয়াকফ সম্পত্তি ডিনোটিফাই বা ওয়াকফ বোর্ডে কোনও প্রকার নিয়োগ হবে না।
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না স্পষ্ট করেন, “পিটিশনের সংখ্যা বাড়ানো হলে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।” গত ১৭ এপ্রিল শীর্ষ আদালত প্রধান পিটিশন পাঁচটিতে সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ২৯ এপ্রিল অতিরিক্ত ১৩টি আবেদন খারিজ করে। আগামী ৫ মে শুনানিতে আইনটির প্রাথমিক বৈধতা ও অন্তর্বর্তীকালীন রিলিফের দাবিগুলো বিবেচনা করা হবে।
কেন্দ্র সরকার আদালতকে জানিয়েছে, ৫ মে পর্যন্ত কোনো ওয়াকফ সম্পত্তি (বিশেষ করে “ব্যবহারকারীর দানকৃত সম্পত্তি”) বাতিল করা হবে না। এছাড়া, ওয়াকফ কাউন্সিল ও রাজ্য বোর্ডগুলিতে নিয়োগ প্রক্রিয়াও স্থগিত রাখা হয়েছে।
গত ৫ এপ্রিল সংসদের উভয় কক্ষে পাস হওয়া এই বিল রাজ্যসভায় ১২৮-৯৫ এবং লোকসভায় ২৮৮-২৩২ ভোটে অনুমোদিত হয়। রাষ্ট্রপতির সম্মতির পর আইনটি আলোচনা ও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়, যেখানে বিরোধী দলগুলি একে “সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় হস্তক্ষেপ” বলে অভিযোগ তোলে।
এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড, জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দ, ডিএমকে ও কংগ্রেসের সংসদ সদস্যসহ মোট ৭২টি আবেদন দায়ের করা হয়েছে। শুনানি পরিচালনায় তিন নোডাল কাউন্সেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যারা বিভিন্ন পিটিশনকারীর মধ্যে সমন্বয় রাখবেন।
৫ মে-র শুনানির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন সব পক্ষ। এই আইনটি কি সংবিধানবিরোধী, নাকি তা বৈধ—সুপ্রিম কোর্টের রায়ই নির্ধারণ করবে ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার ভবিষ্যৎ। সামাজিক-রাজনৈতিক অঙ্গনে এই মামলার ফলাফল ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
সুপ্রিম কোর্টের কঠোর অবস্থান ও পিটিশন সীমিতকরণের সিদ্ধান্তে স্পষ্ট, আইনি প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করতে চাইছে শীর্ষ আদালত।