রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে গরহাজির উপাচার্যরা, সরকারকে ভৎসনা করলেন অধীর,সুজন

এনবিটিভি: আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের ডাকা বৈঠকে উপচার্যরা কেন উপস্থিত হননি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল বাম কংগ্রেসও। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, উপাচার্যরা যা করেছেন তাতে রাজ্যপালকে শুধু অসম্মান করা হয়নি, সাংবিধানিক ব্যবস্থারও অমর্যাদা হয়েছে। এতে রাজ্যের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়েছে বলে সমালোচনা করেছেন তাঁরা।
অতীতেও একবার রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বৈঠকে ডেকেছিলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। কিন্তু তাঁরা কেউই রাজভবনে যাননি। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু এ বারও কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তা নিয়ে রাজ্যপাল নিজের মতো করে অসন্তোষ জানিয়েছেন। স্পষ্টতই বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে রাজনৈতিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার। তার জবাবে আবার শিক্ষা দফতর উপাচার্যদের পাশে দাঁড়িয়ে টুইট করে বলেছে, রাজ্যপাল এ ভাবে বৈঠক ডাকতে পারেন না, তা তাঁর এক্তিয়ার বহির্ভূত।
কিন্তু সার্বিক এই দ্বন্দ্বে নীতিগত ও সাংবিধানিক প্রশ্নে রাজ্যপাল তথা আচার্যের পাশে দাঁড়িয়েছেন অধীর চৌধুরী, সুজন চক্রবর্তীরা। বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে টুইট করে অধীর চৌধুরী বলেছেন, “রাজ্যপালের ডাকা ভার্চুয়াল বৈঠকে উপাচার্যরা যোগ দিলে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ত না। বরং দুই পক্ষের এই যে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ভাল নয়।” এখানেই না থেমে অধীরবাবু বলেন, “ছাত্রদের কাছে কী বার্তা যাচ্ছে? রাজ্যপালকে যে ভাবে অসম্মান করা হচ্ছে তাতে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে”। লোকসভায় কংগ্রেস নেতার কথায়, “বরাবরই প্রতিবাদী চরিত্রের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও বক্তব্য থাকলে তিনি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে জানাতে পারেন। রাষ্ট্রপতিকে তিনি জানাতেই পারেন যে রাজ্যপাল সাংবিধানিক ব্যবস্থা মেনে কাজ করছেন না। কিন্তু সেটা করার সাহস মুখ্যমন্ত্রীর নেই। তিনি উল্টে বাজে কাজে উৎসাহ দিচ্ছেন।”

অন্যদিকে এ ব্যাপারে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “উচ্চশিক্ষার মৌলিক বিষয়টাই হল মুক্ত চিন্তা। এখন বাংলায় সেটাতেই পাঁচিল উঠে গিয়েছে। সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের মতভেদ থাকতেই পারে। কিন্তু রাজ্যপাল তো আচার্য। ভিসি-রা তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন না কেন? এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক।” সুজনবাবুকে প্রশ্ন করা হয়, পাঁচিলটা কে তুলেছে? নবান্ন নাকি রাজভবন? জবাবে তিনি বলেন, “নবান্ন”।
বৈঠকে উপাচার্যদের অনুপস্থিতি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবারও রাজ্যপাল বলেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থেই উপাচার্যদের বৈঠকে যোগ দেওয়া উচিত ছিল। তাঁদের পক্ষপাতমূলক আচরণ থেকে বিরত থাকতে হবে। নইলে আখেরে ক্ষতি হবে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থারই।” তাঁর কথায়, “শিক্ষার প্রতি এই অবহেলা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আঘাত করে। এই রাজ্যে তাই হচ্ছে।”

সংগৃহীত- দি ওয়াল

Latest articles

Related articles