গঙ্গায় তলিয়ে গেছে কয়েকশো বিঘা জমি সহ শতাধিক ঘরবাড়ি, পূনর্বাসন চাইছে মানুষ

গঙ্গায় তলিয়ে গেছে কয়েকশো বিঘা জমি সহ শতাধিক ঘরবাড়ি, পূনর্বাসন চাইছে মানুষ

সাকিরুল ইসলাম,এনবিটিভি,মুর্শিদাবাদ: মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জ থানার শিবপুর,ধানগরা সহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে দুই সপ্তাহ ধরে একনাগাড়ে জমি ও ঘরবাড়ি গ্রাস করছে গঙ্গা। মাত্র দুই সপ্তাহে তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙ্গনে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে প্রায় ১৫০ বিঘা জমি। হারিয়ে গেছে চাষীদের স্বপ্নের জমি আমবাগান, লিচুবাগান, বাঁশঝাড় ও চাষের জমি সহ প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি।

গঙ্গায় কেড়ে নিয়েছে ঘর, চিন্তায় ভাঙা ঘরে বসে আছেন ফয়জুল শেখ

রাক্ষসী গঙ্গার কবল থেকে বাদ যায়নি মন্দির ও বিএসএফ ক্যাম্প।সবকিছু তলিয়ে গেছে নদীর তলায় ।হারিয়ে গেছে স্বপ্নের সেই কৃষি জমি গুলো।

প্রতিদিন পাঁচ ছয় বিঘা জমি গঙ্গার কবলে তলিয়ে যাচ্ছে,অর্থ উপার্জনের একমাত্র সম্বল চাষের জমি হারিয়ে বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল না খেয়ে ঘর টুকু নিয়ে আঁকড়ে বেঁচে থাকতে চাই ছিলেন শিবপুর, ধানঘরা গ্রামের মানুষ, কিন্তু তা আর থাকলো কই রাতের অন্ধকার দিনের আলো একের পর এক সব ঘরবাড়ি তলিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে, না কোন থাকার জায়গা আছে না কোন ঠিকানা আছে।
কেউ স্কুলে ঠাঁই নিয়েছে আবার কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। নির্দিষ্ট কোন ঠিকানা আর নেই।

আতঙ্কিত স্থানীয় মানুষজন

যাদের ঘরবাড়ি নদী থেকে একটু দূরত্ব ছিল, তারাও আজ আতঙ্কিত, ইমারত বিশিষ্ট ঘর বাড়ি ইট-পাটকেল পাথর খুলে নিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। না জানি কখন আবার আমাদের এই ঘর গুলি গঙ্গা গ্রাস করে নেয়।।

এত কিছুর পরেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেই, স্থানীয় বিধায়ক আমিরুল ইসলাম কয়েকদিন খাবার ব্যবস্থা করলেও তাদের স্থায়ী ঠিকানার কোন ব্যবস্থা করতে পারিনি। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, “এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের কিছু করার নেই, এটা কেন্দ্র সরকারের ব্যাপার,কেন্দ্র সরকার কোনরকম সহযোগীতা করছে না।”

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জঙ্গিপুরের সংসদ শিল্পপতি খলিলুর রহমান বলেন, “মুর্শিদাবাদের মানুষের বিড়ি শিল্প আর চাষবাস ছাড়া কোন কাজ নেই, কিন্তু যেটুকু চাষবাসের জমি ছিল সবকিছু তলিয়ে গেছে গঙ্গায়। তিনি আরও বলেন, গঙ্গা ভাঙ্গন জাতীয় বিপর্যয়, এটা নিয়ে আমি বিগত দিনে লোকসভায় লিখিতভাবে এবং বক্তব্যের মাধ্যমে সংস্কারের দাবি জানিয়েছি, এ বিষয়ে কেন্দ্র সরকার কে আমরা আবার জানাবো মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবো এবং আগামী লোকসভা সেশনে এ বিষয়ে স্থায়ী সমাধানের জন্য আবেদন করব।”

জেলার বাসিন্দা ও SDPI এর রাজ্য সভাপতি তায়েদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর যখন নদী ভাঙন হয় তখনই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে অথচ যখন বর্ষা থাকে না শুকনোর সময় প্রশাসন এর স্থায়ী সমাধানের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনা। রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র সরকারের দড়ি টানাটানিতে ভুগে মরে সাধারণ মানুষ‌। আমরা চায় যাদের ভিটেমাটি নষ্ট হয়েছে তাদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন এবং নদীবাঁধ মেরামতের জন্য স্থায়ী সমাধান করা হোক।

স্থানীয় মানুষজন এর একটি দাবি স্থায়ীভাবে কংক্রিটের বাদ দেওয়া হোক যাতে পরবর্তীতে আর না ভাঙ্গন হয়, এবং সাথে সাথেই যাদের ঘর বাড়ি চলে গেছে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।।

Latest articles

Related articles