
বারাকপুর, ভাটপাড়া: রামনবমীর পবিত্র মিছিলে ইজরায়েলের জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন বারাকপুরের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। রবিবারের মিছিলে অর্জুনের এক হাতে হনুমানজির পতাকা, অন্যহাতে ইজরায়েলের নীল-সাদা পতাকা দেখে স্থানীয়দের মধ্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব এই ঘটনাকে “ধর্মের সঙ্গে রাজনীতির বিষক্রিয়া” আখ্যা দিলে, বিজেপি পাল্টা যুক্তি দিচ্ছে— “মহরমে ফিলিস্তিনের পতাকা ওঠে, তাহলে রামনবমীতে ইজরায়েলের পতাকায় দোষ কোথায়?”
ভাটপাড়ার আর্য সমাজ মোড় থেকে হনুমান মন্দির পর্যন্ত রামনবমীর মিছিলে অংশ নেন অর্জুন সিং। তার হাতে ইজরায়েলের পতাকা দেখে অনেকেই চমকে যান।

- মিছিলে কিশোর-তরুণদের হাতে তলোয়ার, ত্রিশূলসহ নানা অস্ত্রও দেখা গেছে, যা স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের মতে, “এটি ধর্মীয় উৎসবকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানোর চক্রান্ত। ইজরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের আন্তর্জাতিক ইস্যুকে এখানে টেনে আনা ন্যাক্কারজনক।”

পাল্টা যুক্তি দেখিয়ে অর্জুন সিং দাবি করেন, “মহরমের মিছিলে ফিলিস্তিনের পতাকা ওঠে। ভারত ইজরায়েলের বন্ধু— তাদের পতাকা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দেখাতে বাধা নেই।”
বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ড্রোন, সিসিটিভি ও অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করে মিছিলে শান্তি বজায় রাখে। এলাকার মন্দির, মসজিদ ও বাজারে কড়া নজরদারি ছিল।
যদিও অস্ত্রধারী অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতি প্রশ্ন তুলেছে ধর্মীয় উৎসবে অস্ত্রের প্রয়োজন কী ছিল?
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, “রামনবমী হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব। এতে বিদেশি রাষ্ট্রের পতাকা টানানো উৎসবের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছে।”

টুইটার-ফেসবুকেও এই ঘটনা ভাইরাল। ব্যবহারকারীরা প্রশ্ন তুলছেন, “গাজা যুদ্ধের সময় ইজরায়েলের পতাকা দেখানো কি ধর্মীয় সংহতির বার্তা দিচ্ছে, নাকি ইসরায়েলের হিংসাত্মক রাজনীতির সমর্থন?”
বারাকপুর পুলিশ জানিয়েছে, কোনো অশান্তি না হওয়ায় তারা সফল। তবে মিছিলে অস্ত্র ও ইজরায়েলি পতাকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি প্রশাসন।
বিজেপি নেতা ও অর্জুনের পুত্র পবন সিং (ভাটপাড়া বিধায়ক) মিছিলে অংশ নিলেও বিতর্ক এড়িয়ে গেছেন।