
উত্তরপ্রদেশের কানপুরে রামনবমী মিছিলের সময় পাথর ছোঁড়ার ভিত্তিহীন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর মঙ্গলবার শত শত হিন্দু একত্রিত হয়ে মুসলিম মালিকানাধীন একাধিক দোকানে ভাঙচুর চালায়। পরের দিন বুধবার পুলিশ জানায়, এই পাথর ছোঁড়ার ঘটনা সত্য নয় এবং ভ্রান্ত তথ্যের জেরে এই হিংসা ও বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গেরুয়া পতাকা হাতে একটি বড় জনতা দোকানগুলির উপর হামলা চালাচ্ছে। এই উন্মত্ত জনতা দোকান থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করতেও দেখা গেছে।
পুলিশ এই ঘটনায় প্রায় ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বিজেপির কয়েকজন নেতা এবং আরএসএসের কর্মীরাও রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে দোকান ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শ্রাবণ কুমার সিং জানিয়েছেন, পাথর ছোঁড়ার গুজব সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি বলেন, “পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ উঠেছিল, কিন্তু তদন্তে আমরা দেখেছি এটি সত্য নয়। এই গুজব কীভাবে ছড়াল, তা আমরা খতিয়ে দেখছি। হামলার সময় কেউ আহত হয়নি।”
উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ যোগী সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, এই ঘটনা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পরিণাম। তাদের বক্তব্য, “শোনা যাচ্ছে কিছু হিন্দু সংগঠন রামনবমী মিছিলের সময় পাথর ছোঁড়ার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়কে দায়ী করেছিল, কিন্তু পুলিশ এই দাবি খারিজ করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরেকটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে মিছিলের অংশগ্রহণকারীরা মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় ভাঙচুর করছে।”

কানপুর পুলিশ শহরের বিভিন্ন এলাকায় রামনবমী মিছিল নিয়ে একাধিক ঘটনায় বেশ কয়েকটি এফআইআর দায়ের করেছে। ‘হিন্দুস্তান’ পত্রিকার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিছিলের সময় উশৃঙ্খলতা, অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে জোরে ডিজে বাজানো এবং অন্যান্য অভিযোগে মোট ৯টি মামলা দায়ের হয়েছে। গগনগঞ্জ, মূলগঞ্জ, চাকেরি, পানকি প্রভৃতি এলাকায় আলাদা আলাদা রিপোর্ট লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। পাথর ছোঁড়ার গুজব ছড়ানোর জন্য একজন ইউটিউবারের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। তদন্ত এখনও চলছে, এবং শান্তিভঙ্গের অভিযোগে অনেক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে, এবং পুলিশ জানিয়েছে যে ভ্রান্ত তথ্য ছড়ানোর মূল উৎস উদঘাটন করা ও জড়িতদের গ্রেফতার করা এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য।