এনবিটিভি ডেস্ক : আজ পাঁচ আগস্ট বিতর্কিত বাবরি মসজিদের জায়গাতে রাম মন্দিরের ভূমিপূজার মাধ্যমে ‘রাম মন্দির’ নির্মানের ইট গাঁথা কাজ শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ক্ষমতা বলে বাবরের তৈরি ৫০০ বছরের মসজিদ ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভেঙ্গে দেয় হিন্দুবাদী বিভন্ন সংগঠন এবং তৎকালীন বিজেপি নেতৃত্বরা। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসের এক রায়ে সুপ্রিমকোর্ট বলেন বিতর্কিত জমিতে হিন্দুরা রাম মন্দির করবে। সেই ভূমিপূজার অংশ বা অনুকরণে বাংলাতে বিজেপি নেতৃত্ব করোনা ও লকডাউন অমান্য করে মিছিল এবং জমায়েত করেন। যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোস্যাল ডিসটেন্স এবং করোনা বিধি পালন করতে বলেছেন, কিন্তু বিজেপির নেতারাই সেটি বার বার ভঙ্গ করছেন। সারা দেশে করোনাকে অপেক্ষা করে কয়েক কোটি মানুষ আজ একত্রিত হলেন। করোনা মহামারি ছড়াতে এটা অবশ্যই সদর্থক ভূমিকা পালন করবে।
বিজেপি হাওড়া জেলার সভাপতি সুরজিত সাহার নেতৃত্বে হাওড়া রাম মন্দিরে ভূমিপূজা এবং মিছিল হয়। মঙ্গলবার রাতেই হাওড়া শহের কয়েকটি জায়গা আলোকে সেজে ওঠে, চলে জয় শ্রীরাম লেখা লেজার শো। মঙ্গলবার বাস্তবিকই রাত জাগে হাওড়ার বিজেপি শিবির । সময় হাওড়া শহরের শ্যামাশ্রী সিনেমা থেকে বিশাল মিছিল যায় রামরাজাতলায়, সেখানে রামের মন্দিরে অযোধ্যা অনুকরণে ভূমিপূজা চলে। বিজেপি মহিলা কর্মীরা বাজি ফাটিয়ে ,আবির মেখে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে মিছিলে সমবেত হন ও এদিন কয়েকটি জায়গাতে এই দিনটি সেলিব্রেট করে শোভাযাত্রার মাধ্যমে।
লকডাউনের ১২ দিন আগে দিল্লির নিজামুদ্দিনে মুসলিমদের একটি ধর্মীয় সমাবেশ ছিল, উক্ত জমায়েত এবং বাড়ি ফিরতে না পার লোকদের নিয়ে করোনা ছড়ানোর নাম করে মিডিয়া এবং বিজেপি সরকার দেখে হিংসার বিষ ছড়িয়েছিল। সেই সময় মার্চের শেষ দিকে বা লকডাউনের আগে ( ২৩ মার্চ ) ৪৯৯টি সর্বোপরি মোট করোনা ছিল দেশে, গড়ে দৈনিক ১৬টি। এখন আজ পাঁচ আগষ্ট ১৯, ০৬,৬১৩ (১৯ লাখ) জন আক্রান্ত। এখন দৈনিক গড়ে প্রায় ৬০ হাজার আক্রান্ত হয়। এখন মানুষের জড়ো হওয়া, একত্রিত হওয়া কোন দোষের নয়, মিডিয়াও চুপ। রাম মন্দির নির্মানে অন্যতম পুরোহিত প্রদীপ দাস দুই আগেই করোনা আক্রান্ত হয় এবং অযোধ্যাতে মোতায়েন থাকা ১৬ জন পুলিশ আক্রান্ত হয়। এর পরেও কয়েক হাজার লোক নিয়ে অযোধ্যাতে ভূমিপূজা করছেন এবং সমগ্র দেশের বিভন্ন জায়গাতে সেটি পালনও করা হচ্ছে। কয়েক কোটি লোক রাম মন্দিরের নামে আজ একত্রিত। এমন অনুষ্ঠান যদি মুসলিমরা করতো ?
অযোধ্যাতে রাম মন্দির তৈরির ভূমিপূজা হবে, সেই পূজার অংশ হিসাবে লকডাইন অমান্য করে একত্রিত হয়ে মিছিল করা ও জোড়া হয়ে পূজা করাটা একান্ত ধর্মীয় কি ? নাকি এতে লুকিয়ে আছে ধর্মের আড়ালে রাজনৈতিক প্রচার এবং সাথে ধর্মীয় তোষণ! যে খানে কিছু তৈরি হবে ভূমিপূজা একমাত্র সেই জায়গাতেই হয়। মন্দির অযোধ্যাতে হচ্ছে, অন্য জায়গাতে পূজার ধর্মীয় অর্থ কতোটা যুক্তিযুক্ত ?