
স্তন খামচে ধরা ও পাজামার ফিতে খুলে ফেলা ধর্ষণ বা ধর্ষণের প্রচেষ্টা নয়, বরং শারীরিক নিগ্রহ—এমনই রায় দিয়েছেন এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি রাম মনোহর নারায়ণ মিশ্রা। এই রায়ের বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী বলেছেন, “এটি সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত, যা সমাজে ভুল বার্তা দেবে।”

২০২১ সালে উত্তরপ্রদেশের কাশগঞ্জে ১১ বছরের এক নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালের জুন মাসে, কাশগঞ্জের পকসো আদালত, একটি মেয়ের মায়ের দায়ের করা আবেদনের ভিত্তিতে, দুই যুবককে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের প্রচেষ্টার অভিযোগে বিচারকের সামনে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করে।

মেয়েটির মা তার আবেদনে উল্লেখ করেন যে, ২০২১ সালের ১০ নভেম্বরে যখন তিনি তার মেয়েকে নিয়ে গ্রামে ফিরছিলেন, তখন গ্রামের দুই যুবক তাকে প্রস্তাব দেয় যে তারা মোটরসাইকেলে তার মেয়েকে বাড়ি পৌঁছে দেবে। যেহেতু ওই দুই যুবক তার গ্রামেরই পরিচিত ছিলেন, তাই তিনি রাজি হয়ে যান। তবে পথে এক যুবক তার মেয়ের স্তন চেপে ধরে এবং অপর যুবক তার পায়জামার ফিতা ছিঁড়ে দেয় ও তাকে কালভার্টের নিচে টেনে নিয়ে যায়।
তখন সেখানে থাকা দুই ব্যক্তি মেয়েটির চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। এরপর অভিযুক্ত দুই যুবক তাদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখায় এবং পালিয়ে যায় বলে মেয়েটির মা অভিযোগ করেন।

কাশগঞ্জের নিম্ন আদালত ওই দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পকসো আইনে মামলা করে। তবে এলাহাবাদ হাই কোর্ট সেই মামলা খারিজ করে বিচারপতি মিশ্রার বেঞ্চ অপরাধমূলক বলপ্রয়োগের জন্য ৩৫৪-বি ধারায় এবং শারীরিক নিগ্রহের জন্য ৯/১০ পকসো ধারায় মামলা চালানোর নির্দেশ দেয়।
বিচারকের এমন সিদ্ধান্তে নাগরিক সমাজে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। ফলে নারী সুরক্ষা আইন ও বিচার ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করে কি না।