মুসলিমদের আক্রমণের উদ্দেশ্যেই হিন্দুত্ববাদীদের রাম মন্দিরের নামে অর্থ সংগ্রহের মিছিল, বিস্ফোরক দিগ্বিজয় সিংহ

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

l116_15191501649593

সাইফুল্লা লস্কর : মধ্যপ্রদেশে কট্টর হিন্দুত্ববাদী শিবরাজ সিং চৌহানের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার বারবার রাম মন্দিরের অর্থ সংগ্রহের নামে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিকে অনুমতি দিয়েছে মিছিল বের করার যার মূল উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে গিয়ে মুসলিমদের আক্রমণ করা এবং তাদেরকে প্ররোচিত করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানো। কেরালা তামিলনাড়ু, কেরালা, পশ্চিমবঙ্গ সহ বেশকিছু রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছে দেশের আবহাওয়া কে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প দ্বারা বিষাক্ত করে তুলতে। এমন মন্তব্য করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতা এবং রাজ্যসভার সংসদ দ্বিগবিজয় সিং।

কংগ্রেসের নেতা আরিফ মাসুদসহ মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস আইন প্রণেতাদের প্রতিনিধিদল দ্বিগবিজয় সিং এর নেতৃত্বে মধ্য প্রদেশের চিফ সেক্রেটারি এবং ডিজিপির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে উজ্জয়ন, মান্ডসর এবং ইন্দরে হিন্দুত্ববাদীদের মুসলিম এলাকাগুলিতে চালানো তাণ্ডবের ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান। তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, লাঠি বন্দুক তলোয়ার নিয়ে রাম মন্দিরের জন্য অর্থ সংগ্রহের নামে মিছিল বের করা হচ্ছে। উল্লেখ্য রাম মন্দিরের নামে যতগুলো মিছিলের অনুমতি মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিং চৌহান সরকার দিয়েছে সবগুলো মিছিলের অংশগ্রহণকারী সন্ত্রাসীদের হাতে বন্দুক লাঠি ছাড়াও ছিল মুসলিমদের বাড়িঘর জ্বালানোর জন্য কেরোসিন এবং মুসলিম যুবকদের মারধর করার জন্য আয়রন রড যা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে।

 

আমি সেইসব হিন্দুদের বিরোধিতা করবো যারা দেশের হিন্দু মুসলিম সংহতি ভঙ্গ করার চেষ্টা করছে। হিন্দু-মুসলিমের সংহতি ভারতবর্ষের ভিত্তি। তারা একই সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামে লড়াই করেছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামে যাদের কোনো অবদান ছিল না তারাই আজ দেশের আবহাওয়াকে বিষাক্ত করার চেষ্টা করছে।” আরএসএস এবং বিজেপির মত ভারতের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি গুলির বিরুদ্ধে এমনই মন্তব্য করেন দ্বিগবিজয় সিং।

তিনি আরো বলেন, “এই সমস্ত সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ঘটনার জন্য প্রত্যেকটা জেলার জেলাশাসকরাই দায়ী। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে তারা এমন সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিছিল বের করার অনুমতি দিতে পারে। মন্ত্রী, আইএএস এবং আইপিএস অফিসাররা দেশের সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ, তারা কোন একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের দাস হতে পারে না সেটা কংগ্রেস হোক বা বিজেপি। যে সমস্ত এলাকায় ঘটনাগুলো ঘটেছে সে সমস্ত জেলার এসপি এবং ডিসট্রিক্ট কালেক্টরদের বরখাস্ত করা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন হিন্দুত্ববাদী উগ্রবাদীরা মুসলিমদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে, মসজিদে আক্রমণ করছে এবং তাদের গাড়ি ভাঙচুর করছে কিন্তু উল্টে তাদেরকেই গ্রেফতার করছে রাজ্য সরকারের পুলিশ। উল্লেখ্য মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর উজ্জাইন এবং মান্ডসোর জেলায় মুসলিমদের ওপর যে সমস্ত সাম্প্রদায়িক আক্রমণগুলো ঘটেছে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই মুসলিমদেরকে গ্রেপ্তার করেছে মধ্যপ্রদেশের পুলিশ। মসজিদে নামাজের সময় মিনারে উঠে গেরুয়া পতাকা টানিয়ে আক্রমণ চালানো হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদের মধ্যে মাত্র দুই একজনকে ঘটনাস্থলে গ্রেপ্তার করলেও পরক্ষনেই ছেড়ে দেয় গেরুয়া বাদী সরকারের পুলিশ।

 

তিনি আরো মন্তব্য করেন, আমি যে কোন বিজেপি নেতার থেকে ভালো হিন্দু। কারণ আমি সেই সনাতন ধর্ম অনুসরণ করি যা সবাইকে শ্রদ্ধা করতে শেখায়।

এর আগে সমাজকর্মী মেধা পাটেকর একই বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এই সমস্ত ঘটনা গুলোতে নিজের কট্টর নির্লজ্জ সাম্প্রদায়িক মনোভাব এবং কর্মকাণ্ড লুকানোর জন্য দ্বিচারিতার নিয়েছেন। তিনি বলেছেন আমরা শুধুমাত্র সমাজবিরোধী ড্রাগ মাফিয়া এবং গুন্ডাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে তাদেরকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না এমনকি কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজায় সিংহ নয়। কিন্তু এই গেরুয়াবাদী মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার সজাগ হলেও রাজ্যের সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ইচ্ছা করেই ঢিলেমি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ সমাজকর্মী মেধা পাটকরের।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর