আলমগীর ইসলামাবাদী
চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশের কওমী মাদরাসাসমূহের সর্ববৃহত শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের শূণ্য হওয়া তিনটি পদেই প্রার্থী নির্বাচিত করার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রবীন আলেম যাত্রাবাড়ি মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা মাহমুদুল হাসান। (শায়খে যাত্রাবাড়ি)।
সিনিয়র সহ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসা মুহতামিম ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন জামিয়া রাহমানিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হক।
আজ শনিবার (৩ অক্টোবর) বেফাকের পূর্ব নির্ধারিত আমেলা মিটিংয়ে সদস্যদের উপস্থিতিতে এ পদগুলো পূর্ণ করা হয়।
এর মধ্যে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের পদ দুটি প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয় এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি পদটি সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নির্বাচিত করা হয়।
এর আগে বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মহাসচিব এই পদ দুটিতে ছিলেন ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা আবদুল কুদ্দুস।
আজকের আমেলা বৈঠকে দীর্ঘ একটি আবেগঘন বক্তব্য দিয়ে তিনি পদ দুটি থেকে পদত্যাগ করেন। তারপর শূণ্য এ দুটি পদে প্রার্থি নির্বাচন করা হয়।
অপরদিকে বেফাকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিনিয়র সহ-সভাপতি গঠনতন্ত্র অনুসারে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য সরকার গঠিত সংস্থা আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়ার যাথাক্রমে চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।
বেফাকের প্রধান এই দুই পদ থেকেই হাইয়াতুল উলয়ার চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। গঠনতন্ত্রে এমনটাই রয়েছে।
আজকে যাত্রাবাড়ির কাজলার ভাঙ্গাপ্রেস এলাকায় বেফাকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আমেলা মিটিংয়ে ১২৫ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাদের অধিকাংশেরই প্রত্যক্ষ ভোটে তারা তিনি নির্বাচিত হন। ভারপ্রাপ্ত সভাপতির পদে আল্লামা মাহমুদুল হাসান ৬৬ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী ৫০ ভোট পান।
পরবর্তিতে কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ সভাপতি ও মহাসচিব নির্বাচনের বিষয়টি সম্পন্ন করা হবে বলেও জানিয়েছে বেফাকের একটি সূত্র। তবে কবে নাগাদ শুরা সদস্যদের উপস্থিতিতে কাউন্সিল ডাকা হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষাবোর্ড ও প্রতিষ্ঠান। বেফাকের অধীন ছয়টি স্তরের সারা দেশের ১৩ হাজার মাদ্রাসা আছে। এসব মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৮ লাখ। কওমি শিক্ষার সনদের সরকারি স্বীকৃতি থাকায় এর গুরুত্ব আরও বেড়েছে। এই সুবাদে সরকারের সঙ্গে কওমি আলেমদের যোগাযোগ আরো বেড়েছে।