লালপুরে পাকা রাস্তা কাটলেন আ’লীগ নেতা, ২০ হাজার লোকের যাতায়াত বন্ধ।

স্টাফ রিপোর্টার
এনবিটিভি নিউজ ডেস্কঃ-

লালপুর উপজেলার বসন্তপুর বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য সরকারী বরাদ্দে কর্তনকৃত খালটি পূর্বেই নিজে ও ছেলেদের দিয়ে পুকুর কেটে বন্ধ করে দিয়েছেন আ’লীগ নেতা ও দুড়দুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আলম মক্কেল। পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ও উপর্যুপরি বৃষ্টিতে সেই পুকুরের মাছ ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হলে, কতিপয় যুবককে ভুল বুঝিয়ে এবার কেটে দিলেন সরকারি পাকা রাস্তা। যার ফলে দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নসহ পাশ্ববর্তী এলাকার প্রায় ২০ হাজার লোকের ব্যবহৃত রাস্তাটি এখন বন্ধ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পানি নিষ্কাশনের জন্য বসন্তপুরে বিলে কর্তনকৃত খালটি পুকুর কেটে বন্ধ করে দেওয়ায় সম্প্রতি চলমান বৃষ্টির কারনে দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের আট্টিকা, বেরিলাবাড়ী, বসন্তপুর, ওমরপুর, গন্ডবিল, রাধাকিষ্টপুর ও মির্জাপুর গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে, অনাবাদি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫ শত হেক্টর অাবাদি জমি।
এলাকাবাসীর দুর্দশার খবর পেয়ে গত বুধবার (২২ জুলাই) বিকেলে সরেজমিন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে আসেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি। পরিদর্শন শেষে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এলাকাবাসীদের। ইউএনও চলে যাবার পর স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আলম, তার ছেলে আব্দুল আলীম, আসাদুজ্জামান বাবু ও ভাই আব্দুল মান্নান মটরকে সাথে নিয়ে কতিপয় যুবককে বিভ্রান্ত করে পাকা রাস্তা কাটার অনুমতি দেন। যার ফলে ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়া সহ এ এলাকার মানুষের একমাত্র যাতায়াতের রাস্তাটি বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া সাবেক এ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি খাল বন্ধ, সরকারি গাছ কর্তন, খাস জমি দখল করে পুকুর কর্তন, চাকুরি প্রদানের নামে প্রতারনার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত সহ তার বিরুদ্ধে গেলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে।
রাস্তা কাটার সাথে সংশ্লিষ্ট রহমান জানান, রাস্তার এখানে কাটলে আমাদের বাড়ির পানি নেমে যাবে বলে সাবেক চেয়ারম্যান কাটার অনুমতি দেয়। এখন দেখছি, যে পানি কমছে তাতে বাড়ি ওয়ালা ও আবাদি জমির মালিকদের না মূল লাভ হচ্ছে পুকুর মালিকদের।
ইউপি সদস্য শাহাদত হোসেন সাদু জানান, ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষদের এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম ও মেইন রোডে যাবার একমাত্র রাস্তা এটি। ইউএনও, বর্তমান চেয়ারম্যান বা আমরা কেউ রাস্তা কাটার অনুমতি দেই নি। সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আলম নিজ স্বার্থের জন্য রাস্তাটি কেটেছেন। রাস্তা কাটার ফলে প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে আমাকে মেইন রোডে আসতে হয়েছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি জানান, সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবো জানিয়েছি ভুক্তভোগীদের, রাস্তা কাটার অনুমতি কাউকে দেই নি। যার রাস্তা কেটেছে তারা কাজটি ঠিক করেন নি। ২ হাজার মানুষের উপকার করতে গিয়ে ২০ হাজার লোককে ভোগান্তিতে ফেলার অধিকার কারো নেই। অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Latest articles

Related articles