যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০৪ ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীর হাতে পায়ে শিকল পরিয়ে প্রত্যাবাসন: অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে
অমৃতসর, ৬ ফেব্রুয়ারি (২০২৪):যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রথম দফায় ১০৪ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বুধবার মার্কিন সামরিক বিমান সি-১৭-এ করে তারা পাঞ্জাবের অমৃতসরের শ্রী গুরু রামদাসজি বিমানবন্দরে পৌঁছান। এদের মধ্যে ২৫ জন নারী ও ১২ জন নাবালক রয়েছেন, যাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠের বয়স মাত্র ৪ বছর। অভিযোগ উঠেছে, হাতকড়া ও পায়ে শিকল পরিয়ে তাদের প্রত্যাবাসন করা হয়েছে, যদিও এ বিষয়ে সরকার ও মার্কিন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভাইরাল ভিডিওতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় কয়েকজনকে বিমানে তোলা দেখা গেছে। তবে ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অভিবাসীদের অপরাধ ইতিহাস খতিয়ে দেখছে। বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর রাজ্যসভায় জানান, মার্কিন কর্তৃপক্ষের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) অধীনে এই প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। নারী ও শিশুদের বাঁধা হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন। তবে বিরোধী দলগুলি দুর্ব্যবহারের অভিযোগে সংসদে তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
জয়শঙ্কর বলেন, প্রত্যাবাসনের সময় মানবিক আচরণ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৫,৭৫৬ জন ভারতীয়কে সেখান থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ২০১৪ সালে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই সংখ্যা বাড়ছে: ২০১৫ সালে ৭০৮, ২০১৬ সালে ১,৩০৩, ২০১৭ সালে ১,০২৪ এবং ২০১৮ সালে ১,১৮০ জন। এবারের দলে পাঞ্জাবের ৩০, হরিয়ানা ও গুজরাতের ৩৩ জন করে এবং মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ ও চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা রয়েছেন।
বিদেশমন্ত্রী অবৈধ অভিবাসন রোধে কঠোর পদক্ষেপের পাশাপাশি বৈধ ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার ওপর জোর দেন। পুলিশি তদন্ত শেষে অভিবাসীদের বাড়ি পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় প্রতারণার শিকার অনেক পরিবার ঋণের বোঝায় জর্জরিত, যা সামাজিক উদ্বেগের নতুন দিক উন্মোচন করেছে।
এই প্রত্যাবাসন ভারত-মার্কিন সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করলেও, এটি অবৈধ অভিবাসন ও মানব পাচার রোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। সরকারের পরিসংখ্যান ও নীতিগত প্রতিক্রিয়া সত্ত্বেও, মানবাধিকার সংগঠনগুলি অভিবাসীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার প্রশ্নটি জোরালোভাবে উত্থাপন করেছে।