
শুক্রবার কর্ণাটক বিধানসভায় স্পিকার ইউটি খাদের প্রতি “অপমানজনক” আচরণের অভিযোগে ১৮ জন বিজেপি বিধায়ককে ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। রাজ্যের আইন ও সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী এইচ কে পাতিলের প্রস্তাব অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে সরকারি চুক্তিতে মুসলমানদের জন্য ৪% সংরক্ষণ বিতর্ককে কেন্দ্রে বিরোধী দল বিজেপির তীব্র বিক্ষোভের পরিণতিতে এই ঘটনা ঘটে।
বিজেপি বিধায়করা স্পিকারের আসনের প্লাটফর্মে উঠে কাগজ ছুড়ে মারেন ও কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেন।
সংসদীয় নিয়ম লঙ্ঘন ও স্পিকারের মর্যাদাহানির অভিযোগে স্থগিতাদেশ প্রস্তাব পাস হয়। পরে মার্শালদের সহায়তায় স্থগিত বিধায়কদের জোর করে বিধানসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়।
বিজেপি নেতারা দাবি করেন, সরকারি এক মন্ত্রীকে ‘হানি ট্র্যাপ’ (প্রলোভন ফাঁদ) এর মাধ্যমে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তারা এই মামলার উচ্চস্তরের তদন্ত দাবি করেন।

ইউটি খাদের বলেন, “এই আসন কেবল একটি চেয়ার নয়, এটি গণতন্ত্র, সত্য ও ন্যায়ের প্রতীক। প্রতিটি সদস্যের উচিত এই আসনের মর্যাদা রক্ষা করা। আমাদের ব্যক্তিগত আবেগ এই আসনের সম্মানের ঊর্ধ্বে নয়। সংসদের ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ করার মতো আচরণ এই চেয়ার সহ্য করবে না।” তিনি এই ঘটনাকে ‘অনুশোচনাজনক’ বলে উল্লেখ করে ভবিষ্যতে সংবিধান ও সংসদীয় শিষ্টাচার মেনে চলার আহ্বান জানান।
বিজেপির নেতা প্রতিপক্ষ আর অশোকা স্থগিতাদেশের সিদ্ধান্তকে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “হানি ট্র্যাপের শিকার মন্ত্রী কে.এন. রাজন্নাকে রক্ষা করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।” তিনি বিচারিক তদন্তের পুনরাবৃত্তি দাবি করেন।
একই দিনে কর্ণাটক বিধান পরিষদেও উত্তপ্ত দৃশ্য দেখা যায়। বিজেপি সদস্যরা একটি বিল ছিঁড়ে ফেলে পরিষদের ‘ওয়েলে’ (মধ্যবর্তী স্থান) নিক্ষেপ করেন। পরিষদের চেয়ারপার্সন বসবরাজ হোরাট্টির সামনে এই অশোভন ঘটনা ঘটে।

কর্ণাটক সরকার সরকারি চুক্তি ও নির্মাণ কাজে মুসলমানদের জন্য ৪% সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়, যা নিয়ে বিজেপি তীব্র বিরোধিতা করে আসছিল। গত কয়েকদিন ধরে এই ইস্যুতে বিধানসভায় উত্তেজনা চলছিল। ২০২৩ সালে ক্ষমতায় আসার পর কংগ্রেস সরকার সংখ্যালঘু সংরক্ষণ পুনর্বহালের চেষ্টা করলেও বিরোধী দলগুলি এটিকে ‘ভোটার বিভাজনের কৌশল’ বলে অভিযোগ করছে।
এই ঘটনায় রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ বাড়লেও সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সংঘাতের নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।