নিউজ ডেস্ক : অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভেঙে তার স্থানে বিতর্কিত রাম মন্দির নির্মাণের বিতর্কিত রায় প্রদান করা হয়েছিল ২০১৯ সালের ৯ ই নভেম্বর। সেই উপলক্ষে গত বছর ৫ ই আগস্ট মোদী নিজে ভূমি পূজা করে রাম মন্দিরের শিলান্যাস করেন। নাম মাত্র মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যার প্রকৃত বাবরি মসজিদের জমি থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে উত্তরপ্রদেশের ধন্নিপুর গ্রামে যোগী সরকার মুসলিমদের ৫ একর জায়গা দান করে। উত্তরপ্রদেশের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের তরফ থেকে একটা ট্রাস্ট গঠন করা হয় সেখানে মসজিদ তৈরি করার জন্য। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দাবি উঠেছিল বাবরির পরিবর্তে তৈরি হতে যাওয়া নয়া মসজিদ বাবরির মতই দেখতে হওয়া উচিত। কিন্তু সেই ট্রাস্টের তৈরি করা মসজিদের নকশা বাবরি মসজিদ কেন, আদৌ কোনো মসজিদের মতোই দেখতে নয়। তার সুঁড়ের মতো এক মিনার মুসলিম ইতিহাসে বিরল। যোগী সরকারকে খুশি করতে তৈরি পরিকল্পিত মসজিদটির না আছে কোনো গম্বুজ আর না আছে মিনার।
তারপরে আবার সমালোচনার ঝড় ওঠে এই মসজিদ তৈরির বিরুদ্ধে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্যরা দাবি করেন, ভারতের মুসলিমদের যথেষ্ট জমি, অর্থ এবং সম্পদ রয়েছে নিজেদের ইবাদতের জন্য মসজিদ তৈরি করার। যে মসজিদ আমাদের অধিকার সেটা যখন নিয়ে নেওয়া হয়েছে তার পরিবর্তে দেওয়া জায়গায় মসজিদ তৈরি করা হারাম। কয়েক দিন আগে মিম সুপ্রিমো আসাদুদ্দিন ওয়াইসিও এই কল্পিত মসজিদে নামাজ পড়া হারাম বলে মন্তব্য করেন। তবে এত বিতর্কের মাঝেও বাকি ছিল আরও বিতর্ক। এবার যোগী সরকারের দেওয়া সেই পাঁচ একর জমি টুকু নিয়েই উঠল নয় বিতর্ক। পাঞ্জাবের দুই বোন দাবি করলেন ওই জমির প্রকৃত মালিক তারা দুজন। তাই যোগী সরকার এই জমি নিতে পারে না।
জমিটির স্বত্ব দাবি করে তারা ইতিমধ্যে মামলা ও দায়ের করেছেন এলাহাবাদ হাইকোর্ট এ। তাদের নাম রানী কাপুর এবং রমা কাপুর।
এলাহাবাদ কোর্টে আবেদনে তাঁরা জানিয়েছেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় তাঁদের বাবা জ্ঞানচন্দ্র পাঞ্জাবি পাঞ্জাব থেকে ফৈজাবাদে চলে এসেছিলেন। এই এলাকা এখন অযোধ্যার মধ্যে পড়ে। ধন্নিপুর গ্রামের ২৮ একর জমি পাঁচ বছরের জন্য তাঁকে লিজে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে তিনিই সেই জমি ভোগ করেছেন। রেভিনিউ রেকর্ডেও রয়েছে জ্ঞানচন্দ্রর নাম। তাই হিসেব মতো বর্তমানে ওই জমি রানি ও রমার।
যদিও পরবর্তীকালে সেই রেকর্ডের খাতা থেকে সরিয়ে জ্ঞানচন্দ্রর নামটি সরিয়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। যার বিরুদ্ধে অযোধ্যার অ্যাডিশনাল কমিশনারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া গেলেও পরে ফের একই ঘটনা ঘটে। কনসলিডেশন অফিসার বিষয়টি সমাধান করার আগেই ওই ২৮ একর থেকে পাঁচ একর জমি চলে যায় মসজিদের খাতে। আর সেই কারণেই এবার এলাহাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ দুই বোন। আদালতের লখনউ বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হতে পারে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড বা যোগী সরকার।