নিউজ ডেস্ক : মোদি সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ভারতের অভ্যন্তরে বারবার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করার প্রচেষ্টা করা হয়েছে শাসকদলের তরফ থেকে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যখনই ভারতের বাইরে থেকে কোনও আওয়াজ উঠেছে ব্যক্তি বা কোন সংগঠন বা কোন দেশ এর তরফ থেকে বিদেশমন্ত্রক তৎক্ষণাৎ এটিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। এবার সেই অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে কৃষক আন্দোলনে সমর্থন দেওয়া পপ গায়িকা রিহানাকে টার্গেট করলো ভারতের মোদী ঘনিষ্ট সেলিব্রিটিরা। বেশিরভাগ খেলোয়াড় এবং বলিউডের তারকারা নিজেদের বিবেক বন্ধক রাখলেও অন্য পথে হাঁটলেন পাঞ্জাবের তরুণ তুর্কি পেসার সন্দীপ শর্মা। তিনি আজ বিদেশমন্ত্রক সহ ভারতের সাম্প্রদায়িক শক্তির ঘনিষ্ঠ সেলিব্রিটিদের “অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সার্বভৌমত্বের” দোহাই দেওয়ার মোক্ষম জবাব দিয়েছেন।
তিনি আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা এক পোস্টে লেখেন,
“বিদেশমন্ত্রক সহ অনেকেই বিখ্যাত গায়িকা রিহানাকে কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে এগিয়ে আসার জন্য আক্রমণ করছে, এটি অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে।
এই যুক্তিতে জার্মানির বাইরে কোন ব্যক্তি জার্মানিতে ইয়াহুদিদের ওপর হওয়া অত্যাচারের ব্যপারে কিছু বলতে পারত না।
এই যুক্তিতে পাকিস্তানের বাইরের কেউ পাকিস্তান এ আহমদি, হিন্দু, খ্রিস্টান এবং শিখদের উপর যে অত্যাচার হচ্ছে তার ব্যাপারে কিছু বলতে পারবে না।
এই যুক্তিতে ভারতে বারবার মুসলিমদের মব লিঞ্চিং এবং ১৯৮৪ সালের শিখবিরোধী গণহত্যার ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে পারবে না।
এই যুক্তিতে আমেরিকার বাইরের কেউ আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের সঙ্গে যে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয় তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারবে না।
এই যুক্তিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার বাইরে থাকা কোন মানুষ সে দেশে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধেও কেউ কথা বলতে পারবে না।
এই যুক্তিতে মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর অমানবিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে মায়ানমারের বাইরের কেউ কিছু বলতে পারবে না।
যতই হোক সবকিছু তো তাদের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ বিষয়।”
উল্লেখ্য রিহানা কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে এগিয়ে আসার পর ভারতের সাম্প্রদায়িক শক্তির ঘনিষ্ঠ বেশকিছু ক্রীড়াজগৎ এবং সিনেমা জগতের সেলিব্রিটিরা বিষয়টিকে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে ধামাচাপা দিয়ে তাদের আওয়াজকে স্তব্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কিন্তু আজ সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের আইপিএল খেলা এবং ভারতের হয়ে বহু আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করা এই তরুণ সুইং বলার যে জবাব দিলেন তার প্রতিউত্তর বোধহয় কারো কাছে নেই। তবে নেটিজেনরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, তাকে এবার ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সিবিআই, এনআইএ বা ইনকাম ট্যাক্স এর মত সংস্থাগুলির সম্মুখীন হতে হতে পারে, হতে পারে তার ক্রিকেট জীবনে এক বড় ধাক্কা আসবে তার এই মন্তব্য এর ফলে। এছাড়াও তাকে মোকাবিলা করতে হবে বিজেপির ট্রোল আর্মির।