নিউজ ডেস্ক : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০০৬, উপমহাদেশের আপামর মুসলমান নর-নারী যখন ঈদের খুশিতে সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠছিল ঠিক সেই সময় তাদের কানে পৌঁছেছিল আমেরিকার অত্যাচার আগ্রাসন এবং অবিচারের বলি মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারী ইরাকি রাজনেতা সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুর খবর। ঈদের আনন্দ অনেকের কাছে এসে দিন হ্রাস পেয়েছিল মুসলিম বিশ্বের এক তাবড় রাষ্ট্রনেতার মৃত্যুর কারণে। তার জীবনের বহু অধ্যায় বহুল আলোচিত এবং বিতর্কিত ছিল। কিন্তু তৎকালীন সময়ে আমেরিকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার নীতিকে সমর্থন জানিয়েছিল বেশির ভাগ মুসলমান। তাই তার মৃত্যুতে কেঁদেছিল কোটি কোটি মুসলমানের প্রাণ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে এই দুঃখের এবং কান্নার পিছনে হাত ছিল ইরাকি বংশোদ্ভূত নামধারী মুসলমান, যে আমেরিকার গোলামী করে সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসির রায় দিয়েছিল সেই প্রহসনের ট্রাইব্যুনালের অংশ হিসেবে। যাকে বিচারক হিসেবে এক সময় নিয়োগ করেছিলেন সাদ্দাম হোসেন নিজে। এবার সেই বিচারকের মৃত্যু হল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।
মহামারি করোনা ভাইরাসে মারা গেছেন ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের বিচারকার্য পরিচালনাকারী বিচারক মোহাম্মদ ওরেবী আল খলিফা। ইরাকের শীর্ষ বিচারক সংস্থার পক্ষ থেকে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইরাকের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুক্রবার (০২ এপ্রিল) বাগদাদের একটি হাসপাতালে ৫২ বছর বয়স্ক ওরেবী আল খলিফা করোনা আক্রান্ত হয়ে শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৯২ সালে বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জনের পর ২০০০ সালে সাদ্দাম সরকারই মোহাম্মদ ওয়েবীকে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দান করে। ২০০৪ সালে তাকেই সাদ্দাম সরকারের বিরুদ্ধে গঠিত ট্রাইব্রুনালের একজন তদন্তকারী বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
ইরাকের আল আওযা নামক জায়গায় ২৮ শে এপ্রিল, ১৯৩৭ সালে জন্ম নিয়েছিলেন সাদ্দাম হোসেন। আমেরিকার দাদাগিরি উপেক্ষা করে ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি ইরাকের রাষ্ট্রনেতা হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তার বিদায়ের পর থেকে গাদ্দাফি এবং বর্তমানে এরদোগান ছাড়া আমেরিকার দাদাগিরির বিরুদ্ধে আর কেউ মাথা উঁচু করে কথা বলতে সাহস করে না, ৫৭ টি মুসলিম রাষ্ট্রে। তাই আজও মুসলিম বিশ্ব ভবিষ্যৎ সাদ্দাম হোসেনের খোঁজে আছে যাকে দেখে যুদ্ধ ছেড়ে আলোচনার কথা বলবে আমেরিকা, যাকে জব্দ করার জন্য আমেরিকাকে বিশ্বের বহু দেশের সমর্থন হাসিল করতে সবার দ্বারে দ্বারে ছুটতে হয়।