নিউজ ডেস্ক : মায়ানমারে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে বিদ্রোহীদের হাতে সেনাদের নিহত হওয়ার ঘটনা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এবার কারেন বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে মিয়ানমারের অন্তত ৮০ সেনা সদস্য নিহত হয়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদ মাধ্যম ‘মিয়ানমার নাউ’ এ খবর দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, গত সোমবার মিয়ানমারের কায়াহ রাজ্যের দেমোসো শহরে এই ঘটনা ঘটে। এছাড়াও তারা রোহিঙ্গা হত্যাকারী বার্মি সেনাদের বিপুল সংখ্যক অস্ত্র শস্ত্র জব্দ করেছে বলে ও জান গিয়েছে। সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীর গতি প্রকৃতি সম্পর্কে বিদ্রোহী গোষ্ঠী এর সদস্যদের তথ্য সরবরাহ করায় সেনাবাহিনীর হতাহত বেশি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
কারেন জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী (কেএনডিএফ) জানায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর তারা ৬০ মিলিমিটার মর্টার লঞ্চার এবং প্রায় ২০টি হালকা অস্ত্র জব্দ করেন।
বেসামরিক যোদ্ধাদের সমন্বয়ে শান রাজ্যের পেখন শহরসহ কারেন এলাকায় ‘কারেন বিদ্রোহীদের’ জোট বিদ্রোহী কর্মকান্ড পরিচালনা করে। এই অঞ্চলজুড়ে অধিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে মিয়ানমারের নৃগোষ্ঠীগত এই বিদ্রোহীরা সক্রিয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান হওয়ার পর বিদ্রোহীদের সঙ্গে জান্তার সংঘর্ষ বেড়েছে।
মিয়ানমার নাউ’য়ের খবরে বলা হয়, সোমবার বেলা দেড়টার দিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ১৫০ সদস্যের একটি দল কায়াহ রাজ্যের রাজধানী লইকাও থেকে দেমোসো শহরের কোনে থার গ্রামের দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় কারেন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে তাদের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়।
কারেন বিদ্রোহীরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সৈন্যদের দৃঢ় প্রতিরোধে জান্তা বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারেন প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক সদস্য বলেন, জান্তা বাহিনীর সদস্যরা কোনে শহরের একটি মুরগির খামারে অবস্থান করছিল। এ সময় অতর্কিতে তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়। সেনাবাহিনীর বহু সদস্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে বিদ্রোহীদের তরফে। বলা হয়, জান্তার ইউনিটটি স্থানীয় না হওয়ায় এলাকাটি তাদের অচেনা ছিল। তাতেই তাদের সুবিধা হয়েছে। এছাড়া নতুন করে বাহিনীতে সৈন্য আনতেও সক্ষম হয়নি তারা। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির এক সদস্য আরো বলেন, সংঘর্ষের সময় তারা কোনো ধরনের সাহায্য পায়নি। মায়ানমারের সাধারণ জনগণ আমাদেরকে সমর্থন দিচ্ছে। আমরা তাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম ফলে কৌশলে আমরা এগিয়ে ছিলাম। এ কারণে তাদের অনেক সদস্য নিহত হয়েছে।
তবে পরবর্তীতে কারেন প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার, যুদ্ধ বিমান এবং কামানের গোলা নিক্ষেপ করে। হামলায় তাদের এক সদস্য নিহত এবং ছয়জন আহত হয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনী স্থল এবং আকাশ পথে আক্রমণের ফলে তারা ওই এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন।