কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনা নিয়ে একটি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে তুরস্ক ও তালিবান কর্তৃপক্ষ। চুক্তির খসড়া অনুযায়ী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তুরস্ক ও কাতার যৌথভাবে কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির নিরাপত্তা প্রদান করবে। পাশাপাশি আঙ্কারা তালিবানকে আফগানিস্তানের বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
মিডল ইস্ট আই এর প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী সপ্তাহে আফগানিস্তান থেকে সকল বিদেশি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেয়ার পরপরই চুক্তিটি চূড়ান্ত হবে। তুরস্ক ও কাতার একটি কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে বিমানবন্দরটি পরিচালনা করবে। এক্ষেত্রে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হবে। যেখানে সাবেক তুর্কি সেনা ও পুলিশ সদস্য থাকবেন।
চুক্তির আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, আফগানিস্তানের বৈধ সরকার হিসেবে তালিবানকে স্বীকৃতি দেবে তুরস্ক। তবে এ চুক্তির ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের সমস্যা রয়ে গেছে। গত বছরের অক্টোবরে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক কনসোর্টিয়ামকে বিমানবন্দরটির দায়িত্ব দিয়েছিল তৎকালীন ঘানি সরকার। এক্ষেত্রে তালিবানকে আলাদাভাবে তাদের সাথে চুক্তি করতে হবে।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েক সপ্তাহ থেকেই তুরস্ক আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীর প্রত্যাহার শেষ হওয়ার পর কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়ার বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
তুর্কি স্পেশাল ফোর্সের অতিরিক্ত সদস্য যারা বিমানবন্দরের টেকনিক্যাল খাতে সহায়তা দেয়া তুর্কি কর্মীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে, তারা সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে এবং বিমানবন্দরের সীমানার বাইরে যেতে পারবে না।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার জেরে আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায় মার্কিন বাহিনী। অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রসজ্জ্বিত মার্কিন সৈন্যদের হামলায় আফগানিস্তানের তৎকালীন তালিবান সরকার পিছু হটে।তবে একটানা দুই দশক যুদ্ধ চলে দেশটিতে।
দীর্ঘ দুই দশক আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের দখলের পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতারের দোহায় এক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে দেশটি থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করতে সম্মত হয় ওয়াশিংটন। এর বিপরীতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে তালিবান সম্মত হয়।
চুক্তি অনুসারে ক্ষমতাসীন থাকা মার্কিন সমর্থনপুষ্ট আফগান সরকারের সমঝোতার জন্য তালিবান চেষ্টা করলেও দুই পক্ষের মধ্যে কোনো সমঝোতা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের মধ্যে পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাতে শুরু করে তালিবান। মে থেকে অভিযান শুরুর পর সাড়ে তিন মাসের মাথায় ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুলের অধিকার নেয় তালিবান যোদ্ধারা।