এনবিটিভি ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে ছেলে-বুড়ো, কিশোরী থেকে মধ্যবয়স্কা সকলেই মুখ ঢাকছেন মাস্কে। কবে যাবে করোনাতঙ্ক, সেটা বলতে পারছেন না কেউই। ফলে সংক্রমণের হার কমে গেলেও আগামী বেশ কয়েকমাস মুখে মাস্ক পড়েই ঘুরতে হবে বলেই মনে করছেন সকলে। এমনকী, মনোবিদদের একাংশ মনে করছেন অনেকের মধ্যেই এই অভ্যাস চিরকালের জন্য রয়ে যাবে। ফলে লকডাউন পুরোপুরি উঠে গেলেও স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, শপিং মল, সিনেমা হল বা বাসে-ট্রেনে অনেককেই দেখা যাবে মুখে মাস্ক নিয়ে ঘুরতে। আবার বিভিন্ন অফিস-কাছারিতে মুখে মাস্ক নিয়েই কাজ করার নিদান দিয়েছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ফলে মাস্ক আমাদের জীবনের একটা অঙ্গ হয়ে দাঁড়াতে চলেছে এটা বলাই বাহুল্য। আর এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বিপন্ন হতে চলেছে লিপস্টিকের চলন। কসমেটিক্স এবং প্রসাধন সামগ্রী বিক্রেতা সংস্থাগুলি অন্তত এমনটাই আশঙ্কা করছে।
তাঁদের ধারণা ভারতে মহিলাদের মধ্যে রূপটানের বাক্স থেকে বাদ পড়বে লিপস্টিক ও নেলপালিশ। ল্যাকমে বা হিন্দুস্থান ইউনিলিভারের মতো প্রসাধনী সামগ্রী উৎপাদনকারী সংস্থা মনে করছেন ভারতে লিপস্টিকের বিক্রি ২০ থেকে ৪০ শতাংশ কমবে। হিন্দুস্থান ইউনিলিভারের এক আধিকারিকের কথায়, ‘করোনা সুরক্ষার জন্য মাস্কের ব্যবহার বজায় থাকবে এবং সেটাই কাম্য। এই পরিস্থিতিতে লিপস্টিকের বিক্রি যে কমবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই’। তবে তিনি এটাও জানাচ্ছেন, সকলে মাস্ক পড়লেও হাতে গ্লাভস পড়ছেন না। ফলে লিপস্টিকের বিক্রি কমলে নেলপালিশের বিক্রি এতটা কমবেনা। ল্যাকমে, এল-১৮, রেভলনের মতো প্রসাধনী সংস্থার ডিস্ট্রিবিউটারদের দাবি, লকডাউনের জন্য দুমাসের বেশি সময় কেউ বাড়ি থেকে বের হয়নি। ফলে এখন দোকান খুললেও স্টক মজুত রয়েছে।
কিন্তু মাস্কের জেরে লিপস্টিকের প্রয়োজন খুব একটা পড়বে না বর্তমানে। তাই দোকানে দোকানে পুশ সেলিং বন্ধ রেখেছেন ডিস্ট্রিবিউটাররা। কোম্পানিগুলিও একই আশঙ্কা থেকে পুশ সেলিং আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও বিক্রি নেই লিপস্টিকের। তবে এই মুহূর্তে মহিলাদের রূপটানের জন্য সানস্ক্রিন লোশন, ময়শ্চারাইজার ক্রিম, আই লাইনার, কাজলের বিক্রি ভালোই। তবে ডিস্ট্রিবিউটাররা আরও জানাচ্ছেন, লিপস্টিকের বিক্রি কমলেও মাস্কের নীচে ঠোঁট ভিজে রাখার জন্য লিপগ্লসের ব্যবহার ভালোই বেড়েছে। এখন দেখার সোশাল মিডিয়ার এই যুগে লিপস্টিক, নেলপালিশের ব্যবহার আদৌ কমে কিনা। কারণ সেলফি, ফেসবুক, টিকটটের যুগে এই প্রযন্মের মহিলাদের লিপস্টিক অপরিহার্য।