এনবিটিভি ডেস্কঃ বইয়ের মলাট দেখে যেমন পুরো বইটার বিচার করা যায় না। ঠিক তেমনি একটি মানুষের গায়ের পোশাক দেখে কারোর ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়না। এমন এক সিনেমাটিক ঘটনা ঘটলো কর্ণাটকের এক কৃষক ও মাহিন্দ্রা গাড়ির শোরুমের কর্মীদের মধ্যে।
কর্ণাটকের এক মাহিন্দ্রা গাড়ির শোরুমের এক কৃষক ও তার বন্ধু মাহিন্দ্রা গাড়ির শোরুমে পৌঁছালে সেখানকার বিক্রয়কর্মীরা উপহাস করতে থাকে। এমন ঘটনা দেখে কৃষকরা খুবই লজ্জিত বোধ করছিল। বিক্রয়কর্মীরা উপহাস করে বলেন যে, যাদের ১০ টাকা নাই আবার তারা ১০ লক্ষ টাকার গাড়ী কিনতে এসেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে আসায় অবাক হয়ে যায় বিক্রয়কর্মীরা
প্রসঙ্গত, এটা জেনো এক সিনেমার দৃশ্য। কিছুদিন পূর্বে এক কৃষক ও তার বন্ধুরা কর্ণাটকের তুমাকুরুর একটি মাহিন্দ্রা গাড়ির শোরুমে একটি নতুন পিক-আপ ট্রাক কিনতে গিয়েছিল। তখন তাদের পোশাক এবং চেহারা নিয়ে গাড়ির শোরুমের বিক্রয়কর্মীরা তিরস্কার করতে থাকে। বিক্রয়কর্মীদের মধ্যে একজন বলে ওঠে, “পকেটে ১০ টাকা নাই আবার ১০ লক্ষ টাকার গাড়ী কিনতে এসেছে। যদি তোমরা কিছুক্ষনের মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে আসতো পারো, তাহলে গাড়ীটি সঙ্গে সঙ্গে হাতে তুলে দেওয়া হবে।”
কৃষকদের মধ্যে হতে একজন মাত্র আধঘণ্টার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা নিয়েই উপস্থিত হয়। এই দৃশ্য দেখে বিক্রয়কর্মীরা হতচকিয়ে যায়। এর পরে বিক্রয়কর্মীরা তাদের হাতে গাড়ি তুলে দিতে অস্বীকার করে। কর্মীদের আবেদন ছিল যে, কোন বিক্রয়কৃত গাড়ী সঙ্গে সঙ্গে ডেলিভারি হয়না। ফলে, দুই দলের মধ্যে বেধে যায় তর্জা।
কর্ণাটকের মাহিন্দ্রা গাড়ির শোরুমে পুরো ঘটনা ক্যামেরা বন্দী করে। এবং তা সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে। নিন্দার ঝড়ও উঠতে থাকে। পরে মাহিন্দ্রা গাড়ির শোরুমের বিক্রয়কারীরা পুলিশের দ্বারস্থ হয়।
ভুক্তভোগী কেম্পে গৌড়াকে বলতে শোনা যায় যে, “আমরা থানায় অভিযোগ করতে পারি। আমাদের যদি কোন ভুল হয়ে থাকে তাহলে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। অবশ্যই প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে, পরবর্তীতে কৃষকদের সাথে এইভাবে আচরণ না করে। সমাজের কৃষকদের এমন খারাপ ভাবে অপমান করা ঠিক হয়নি তাদের।”
বিষয়টি পুলিশের কাছে গিয়ে শেষ পর্যন্ত শোরুমের কর্মচারীদের লিখিত ক্ষমা চেয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু ক্ষমা চাওয়াই যথেষ্ট নয় বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে, কৃষকরা গাড়ি না নিয়ে চলে যায়।
এই ঘটনা মাহেন্দ্রা গ্রুপের সুপ্রিম আনান্দ মাহিন্দ্রার কাছে পৌঁছালে তিনি বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি টুইটে লেখেন, “মাহিন্দ্রার মূল উদ্দেশ্য হল সমাজ এবং আমাদের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে উন্নতির শিখরে পৌঁছতে সাহায্য করা৷ এবং এর একটি মূল মন্ত্র হল প্রত্যেকের প্রতি মর্যাদা সমান রাখা। এই সংক্রান্ত যে কোনও অঘটনের ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।”