মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কঠোর নির্দেশিকা অনুযায়ী, চলতি মাধ্যমিক পরীক্ষায় নজরদারি করা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে মোবাইল ফোন বা যেকোনো বৈদ্যুতিন যন্ত্র রাখা নিষিদ্ধ করেছে পর্ষদ। পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের সময় এসব ডিভাইস ভেনু সুপারভাইজার বা সেন্টার সেক্রেটারির কাছে জমা দিতে হবে। নিয়ম লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের ঘোষণা করা হয়েছে ।
পরীক্ষার দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে ।
শিক্ষকদের মোবাইল জমা দেওয়ার পাশাপাশি একটি রেজিস্টারে তাদের নাম ও ডিভাইসের তথ্য লিপিবদ্ধ করতে হবে। যাদের ডিভাইস নেই, তাদেরও লিখিতভাবে ঘোষণা করতে হবে ।
পরীক্ষা চলা কালীন কোনো শিক্ষকের কাছে মোবাইল পাওয়া গেলে অ্যাড হক কমিটি তদন্ত করে দ্রুত কড়া ব্যবস্থা নেবে ।
গত মঙ্গলবার (২০২৫-০২-০৪) মধ্যশিক্ষা পর্ষদে একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা অভিযোগ তুলেছেন যে নামের মিল না থাকায় অনেক পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড পায়নি। কিছু ক্ষেত্রে ভুল নামে এডমিট কার্ড জারি হয়েছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর এবার পরীক্ষা দেওয়ারই কথা ছিল না । এ বিষয়ে ডিএসও-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় স্কুলগুলির দাবি সমর্থন করে বলেন, “যারা এখনও অ্যাডমিট কার্ড পায়নি, তাদের জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিন। অন্যথায় আন্দোলন অনিবার্য” ।
পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় এ ঘটনার দায় স্কুলগুলির উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। তাঁর মতে, কিছু স্কুল ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষার্থীদের এনরোল করতে গাফিলতি করেছে। ১৩৬টি স্কুল ঠিকমতো অ্যাডমিট কার্ড বণ্টন করেনি, যার ফলে ১৮১ জন পরীক্ষার্থী শেষ মুহূর্তে এনরোল করতে বাধ্য হয়েছে । তিনি স্পষ্ট করেন, “পরীক্ষার প্রক্রিয়া পুনর্গঠন জটিল হওয়ায় এখন নতুন করে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া সম্ভব নয়” ।
১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। এবার ২,৬৮৩টি কেন্দ্রে মোট ৯,৮৪,৭৫৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে, যার মধ্যে ৪,২৮,৮০৩ জন ছাত্র এবং ৫,৫৫,৯৫০ জন ছাত্রী ।
প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নকল রোধে প্রতিটি কেন্দ্রে তিনটি স্থানে সিসিটিভি বসানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া, পরিদর্শক দল ও হেল্পলাইন নম্বরের মাধ্যমে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে ।
মাধ্যমিকের সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পর্ষদের এই কঠোর পদক্ষেপ পরীক্ষার সততা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে অ্যাডমিট কার্ড ইস্যুতে উত্তপ্ত বিতর্ক চলমান থাকায় পরীক্ষা শুরুর আগেই চাপ বাড়ছে প্রশাসনের উপর।