এনবিটিভি ডেস্ক: রাজধানী দিল্লি লাগোয়া গুরগাঁওতে এক যুবককে গরুর মাংস পরিবহনের অভিযোগে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। লুকমান খান নামের ওই যুবক ট্রাকে করে মাংস নিয়ে যাচ্ছিলেন এবং সেটা মহিষের মাংস বলে জানিয়েছেন ওই বাজারটির প্রধান।
ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক যুবককে অন্য কয়েকজন মাটিতে ফেলে মারছে। এরই মধ্যে একজন হাতুড়ি দিয়ে তার মাথা আর হাঁটুতে মারছে – সেটাও দেখা গেছে।
ভিডিওতে আরও দেখা যাচ্ছে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির থাকলেও তারা কাউকে বাধা দিচ্ছে না। পরে অবশ্য একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
লুকমান খান পুলিশকে জানিয়েছেন যে একটি ট্রাফিক সিগনাল থেকে তাকে কয়েকজন যুবক মোটরসাইকেলে তাড়া করে এবং একটা সময়ে তার ট্রাকটি থামিয়ে কাঁচ ভেঙ্গে দেয়।
তাদের সন্দেহ ছিল ওই ট্রাকে গরুর মাংস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং এই অভিযোগে ব্যাপক মারধর করা হতে থাকে।
লুকমান যার কাছে মাংস নিয়ে যাচ্ছিলেন, ওই বাজার কমিটির প্রেসিডেন্ট মি. তাহির সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন যে ওটা মোষের মাংসই ছিল এবং তিনি এই কারবার করছেন গত ৫০ বছর ধরে।
যে বাদশাপুর এলাকায় গণপিটুনির এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানকার সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রীত পাল সাঙ্গওয়ান জানিয়েছেন, “অভিযুক্তদের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের আজ রাত বা কাল সকালের মধ্যেই ধরা হবে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখেই আমরা অভিযুক্তদের চিহ্নিত করছি।”
ঘটনার সময়ে পুলিশ থাকলেও তারা বাধা দিল না কেন, এই প্রশ্নের জবাবে মি. সাঙ্গওয়ান বলেন, “৬০ -৭০ জনের একটা মারমুখী ভীড় সেখানে ছিল, অন্যদিকে পুলিশকর্মী ছিল মাত্র ৩ জন। তাদের পক্ষে ওই মারমুখী ভীড় সামলানো সম্ভব হয় নি। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই থানার ওসি সহ বড় পুলিশদল সেখানে যায়। তারাই লুকমানকে উদ্ধার করে আর ওই মাংসটা আসলে কীসের — গরু না মোষ তা পরীক্ষা করতে পাঠায়।”
পুলিশ জানিয়েছে লুকমান খানের মাথার খুলি ফেটে গেছে এবং তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও সঙ্কট পুরোপুরি কাটে নি।
এর পর একটাই প্রশ্ন থাকে, কোনদিকে এগোচ্ছি আমরা! কোন ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে আমাদের সমাজ! এই সামাজিক অবক্ষয়ের পরিণাম কী!