দিল্লির মসনদে এখন বিজেপি সরকার। ডবল ইঞ্জিন সরকার ক্ষমতায় আসা মাত্র, আবারও ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা সামনে উঠে আসছে। গতকাল সকাল সাতটা নাগাদ জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৪ জন ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে দিল্লির ডবল ইঞ্জিন সরকারের পুলিশ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, একদল পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তাণ্ডব চালায়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ পুলিশ ডাকে। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা দাবি করছে অন্য কথা। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের বক্তব্য অনুযায়ী, বিজেপি শাসিত দিল্লির পুলিশ কয়েকজন পড়ুয়াকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। তারপর থেকে তাঁদের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রেফতারির প্রতিবাদে প্রত্যক্ষদর্শী পড়ুয়ারা সংবাদমাধ্যমের কাছে পুলিশের এই অমানবীক আচরণের তথ্য তুলে ধরেছে। প্রত্যক্ষদর্শী পড়ুয়ারা জানিয়েছে, দিল্লী পুলিশের গাড়ি করে একদল পড়ুয়াদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এখনো জানানেই তারা এখন কোথায় আছে পুলিশ স্টেশনে রয়েছে। কাজেই পড়ুয়ারা এই ঘটনাটিকে দিল্লি পুলিশ ও জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা সুপরিকল্পিত কিডন্যাপিং বলে দাবি করছে।
স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদটাই একমাত্র পথ।
এই পথ অবলম্বনেই আবারো ভুক্তভোগী হলো পড়ুয়ারা। যাদের হাতে ভারতের ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল বারবার তাদেরকেই কেন শাসকের রক্ত চক্ষুর মধ্যে পড়তে হয়? প্রশ্ন তুলছে সমাজের বিশিষ্টজনেরা।
২০১৯ সিএএ-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উত্তাল গোটা রাজ্য। সেই সময় জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্র-ছাত্রীরাও প্রতিবাদে মুখর ছিলো। এই প্রতিবাদের মাঝে ১৫ ই ডিসেম্বর ২০১৯ সালে একদল পুলিশ আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে লাইব্রেরীতে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের উপর অকথ্য অত্যাচার চালায়। এই নারকীয় অত্যাচারের বিরুদ্ধে ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানানোর উদ্দেশ্যে প্রত্যেক বছর (কোভিড সময় কাল ব্যতি রেখে) ১৫ ই ডিসেম্বর জানানো হয় প্রতিবাদ। স্বভাব সিদ্ধভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত বছর ১৫ ই ডিসেম্বর ছাত্রদের জমায়েত এবং প্রতিবাদে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এরপরেই ঘটে যত বিপত্তি। পড়ুয়াদের একাংশ অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মারফত আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়, এতে তাদের পড়াশোনা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর পর ১০ ই ফেব্রুয়ারি থেকে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ক্যান্টিনে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিনিয়ত বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করে আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা ক্যান্টিনে ভাঙচুর চালিয়েছে। এরফলে কর্তৃপক্ষ পুলিশের দ্বারস্থ হয়। সুত্র মারফত জানা যাচ্ছে, গতকাল পুলিশ এসে,
শাজাহান, মিশকাত, সৌরভ, হজরত পরওয়ানা, জোগ্যেশ, হাবিব, উঠার, য়াগরাজ, গায়ত্রী, জ্যোতি, সাহিব, মুলায়ম, নামক পড়ুয়াদের গ্রেপ্তার করেছে।