Saturday, April 19, 2025
33 C
Kolkata

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অগ্নিকাণ্ড : তৃণমূল-সমর্থিত শিক্ষাবন্ধু সমিতির অফিসে রহস্যজনক আগুন

আজকের ভারতবর্ষে যেখানে গণতন্ত্রের প্রতি এক নিঃসহায় আক্রমণ অব্যাহত, সেখানে লখিমপুর খেরি ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার মাঝে একটাই স্পষ্ট – যেখানে বিরোধী মত প্রকাশ করা হয়, সেখানে গাড়ির চাপে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকেই নির্মমভাবে চুপ করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

লখিমপুর খেরিতে কৃষক আন্দোলনরতদের উপর গাড়ি চালিয়ে নীরব করে দেওয়ার ঘটনাটি শুধু এক রক্তাক্ত অধ্যায় নয়, বরং গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করার এক নির্মম প্রচেষ্টা। এখানে গাড়ির টায়ারের নিচে কেবল কৃষকের প্রাণ নেয়া যায়নি, বরং তাদের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকারকেও ধ্বংস করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এগুলো হল নির্মম স্বৈরাচারের চিহ্ন, যেখানে বিরোধী মতকে বলপূর্বক দমিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিকেও প্রহার করা হচ্ছে।

এখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একই নৃশংসতা পুনরাবৃত্তি হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে যোগ দিতে আসা ওয়েবকুপার সদস্যদের মাঝে উদ্দীপ্ত ছাত্রবিক্ষোভের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে ছাএদের গাড়ি চাপা দেওয়া গণতন্ত্রকে কণ্ঠরোধের মরিয়া প্রচেষ্টা। এখানে শিক্ষার্থীদের কন্ঠস্বাধীনতা ও প্রতিরোধের চেতনাকেই এক সুসংগতভাবে চুপ করানোর জন্য যানবাহনের সহিংস প্রয়োগ করা হয়েছে।

গাড়ি চাপা দেয়ার অর্থ শুধু মাত্র একটি ছাত্র প্রাণে মেরে ফেলার প্রচেষ্টা বা হুমকি নয়, এটি একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা – যেখানে সরকারের বিরোধিতা করা হয়, যেখানে গণতন্ত্রের কথা বলা হয়, যেখানে মুক্ত চিন্তার কথা বলা হয়, তাদের এটাই হুমকি দেওয়া যে
সরকার বিরোধিতা করলে তাদের পরিণতি প্রাণহানি হতে পারে। অতএব সরকার বিরোধিতা করোনা, যা হচ্চে মেনে নাও। এটি এক প্রকার গনতন্ত্রের হত্যা, যেখানে প্রতিটি চাকার স্পর্শে নাগরিক অধিকারগুলিকে এক এক করে চূর্ণবিচূর্ণ করা হচ্ছে।

যে রাষ্ট্র গণতন্ত্রকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করে, সেখানে এভাবে বিরোধী মতকে গাড়িচাপা দেওয়া এক ভয়াবহ ইঙ্গিত। মুক্ত চিন্তাকারক, বিদ্রোহী, বুদ্ধি ও সাহসিকতার চিহ্ন হিসেবে শিক্ষার্থী ও কৃষকরা যে প্রতিবাদ দেখিয়েছেন, তা শাসকের বুকে তীব্র ভয়ের সৃষ্টি করেছে।

এই ঘটনা স্পষ্টতই প্রমাণ করে করে – আজকের শাসকগণ গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকারকে অবমূল্যায়ন করে, বিরোধী মতকে চুপ করানোর জন্য গাড়ির মতো যান্ত্রিক শক্তিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন।

যেখানে যতই প্রতিবাদ উঠুক, গণতন্ত্রকে প্রাণবন্ত রাখতে হবে মুক্ত চিন্তা ও মতবাদের আগুন ছড়িয়ে দিতে হবে। কিন্তু আজকের ভারতবর্ষে যেখানে শাসকরা নির্লজ্জভাবে যানবাহনের চাকায় পিষে বিরোধী চেতনাকে নিস্তব্ধ করতে উদ্যমী, সেখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।

Hot this week

আদালতের নির্দেশে ভাঙল নির্মাণ, অভিযোগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার

নির্মাণ সংক্রান্ত নিয়মভঙ্গের অভিযোগে মধ্যমগ্রামে এক ব্যক্তির বাড়ি ভাঙল...

এই শহর গর্বিত : জিব্রাল্টার প্রণালী জয় করলেন বাংলার জল-কন্যা সায়নী দাস

বাংলার জলে ভেসে বেড়ানো এক সাহসিনী, যিনি একের পর...

আজ মুর্শিদাবাদে রাজ্যপাল ও জাতীয় মহিলা কমিশন

আজ, শনিবার, প্রশাসনিক ও সামাজিক দিক থেকে এক গুরুত্বপূর্ণ...

চাকরিহারা শিক্ষকদের লড়াইকে সংহতি না জানিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উক্তি “আমায় রাজনীতিতে জড়াবেন না”

কলকাতা: রাজ্যে চাকরি বাতিলের ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে সুপ্রিম...

Topics

আদালতের নির্দেশে ভাঙল নির্মাণ, অভিযোগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার

নির্মাণ সংক্রান্ত নিয়মভঙ্গের অভিযোগে মধ্যমগ্রামে এক ব্যক্তির বাড়ি ভাঙল...

আজ মুর্শিদাবাদে রাজ্যপাল ও জাতীয় মহিলা কমিশন

আজ, শনিবার, প্রশাসনিক ও সামাজিক দিক থেকে এক গুরুত্বপূর্ণ...

দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে চলন্ত বাসে আগুন! জানালা ভেঙে প্রাণে বাঁচলেন যাত্রীরা

বৃহস্পতিবার রাতে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ওপর ঘটে গেল এক...

গাজায় আবারও রক্তঝরা দিন, খান ইউনুসে একই পরিবারের ১৩ জন নিহত

গাজায় খান ইউনুস এলাকায় ইসরায়েলের একটি বিমান হামলায় একই...

Related Articles

Popular Categories