তালিবানকে স্বীকৃতি দেবে চিন, হঠাৎ ঘোষণায় বেকায়দায় আমেরিকা এবং তার মিত্ররা

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

ryyjkxf25fhcycng_1628827794

 

কাবুলে পশ্চিমা সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করতে সফল হলে চীন তালেবানকে আফগানিস্তানের বৈধ শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত বলে জানা গেছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে উদ্ধৃত মার্কিন এবং বিদেশী গোয়েন্দা সূত্রের মতে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের সাথে তাদের সম্পর্ক আনুষ্ঠানিক করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তালিবানরা বর্তমানে ৩৪টির মধ্যে ১৮টি প্রাদেশিক রাজধানীসহ আফগানিস্তানের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা রাজধানী কাবুলের দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। এর মধ্যে বেইজিং থেকে তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পরিকল্পনার জন্য ধাক্কা হিসাবে আসবে। তিনি আন্তর্জাতিক বিচ্ছিনড়বতার হুমকিকে ব্যবহার করে তালেবানকে রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য আলোচনায় ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছিলেন। চীন দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে, যারা আফগানিস্তানের সাথে একটি দীর্ঘ পাহাড়ি সীমানা ভাগ করে নিয়েছে। অনেক আফগান বিশ্বাস করে যে, পাকিস্তান তালেবান যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এবং চিকিৎসা সহায়তা দেয়ার জন্য নিরাপদ আশ্রয় প্রদান করে সহায়তা করছে। ‘আমি আফগানদের কাছে খোলাখুলি বলতে পারি যে, এই যুদ্ধটি তালেবান এবং আফগান সরকারের মধ্যে নয়। এটি আফগান জাতির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের যুদ্ধ,’ হেরাতের কাছে মার্কিন মিত্রবাহিনীর শক্তিশালী যুদ্ধবাজ নেতা ইসমাইল খান এই সপ্তাহে এপিকে বলেন, ‘তালেবানরা তাদের সম্পদ এবং চাকর হিসেবে কাজ করছে।’ এদিকে, বেইজিং আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত শাসকের পরিবর্তে তালেবানের ক্ষমতায় আসার বিষয়টি একটি সুযোগ হিসাবে দেখতে পারে, যারা চীনের সাথে একটি সীমানা ভাগ করে নিয়েছে। কিন্তু চীনের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ পরিকল্পনায় যোগ দেয়নি। ডেইরেক গবেষক ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকগ্রসম্যান লিখেছেন, ‘পেশোয়ার-কাবুল মোটরওয়ে নির্মাণে বেইজিং সক্রিয়ভাবে কাবুলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে, যা পাকিস্তানকে আফগানিস্তানের সাথে সংযুক্ত করবে এবং কাবুল চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নামের ব্যাপক অবকাঠামো এবং বিনিয়োগ পরিকল্পনায় অংশ নেবে।’ তিনি বলেন, ‘বেইজিং ওয়াখান করিডরের মধ্য দিয়ে একটি প্রধান রাস্তাও তৈরি করছে – যা চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশকে আফগানিস্তানের সাথে সংযুক্ত করে এবং পাকিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার সাথে সংযুক্ত করে, এই অঞ্চলের মাধ্যমে তার বিদ্যমান সড়ক নেটওয়ার্কের পরিপূরক।’ গ্রসম্যান লিখেছেন, ‘একবার সম্পনড়ব হলে, এই নতুন রাস্তাগুলোর মাধ্যমে বেইজিং এই অঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং আফগানিস্তানে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম করবে। আফগানিস্তানে তালেবানরা আবার ক্ষমতায় এলে বেইজিং উল্লেখযোগ্যভাবে উপকৃত হবে।‘গত মাসে, তালেবান মুখপাত্র সুহেল শাহীন একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে ‘চীন একটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ এবং আমরা আফগানিস্তান পুনর্গঠন এবং উন্নয়ন করার জন্য তাদেরকে স্বাগত জানাই … যদি চীন বিনিয়োগ করে, অবশ্যই আমরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’ চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয়
জিনজিয়াং প্রদেশে বিদ্রোহের জন্য নিবেদিত কোন ইসলামী চরমপন্থীদের আশ্রয় না দেয়ার জন্য বেইজিং ইতিমধ্যেই তালেবানদের কাছ থেকে চুক্তি নিশ্চিত করেছে। বাইডেন প্রশাসন বারবার তালেবানকে ‘আন্তর্জাতিক বৈধতার’ না দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে, যদি না দলটি রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য শান্তি প্রক্রিয়ায় ফিরে আসে। শুক্রবার, তালেবানরা আফগানিস্তানের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আরও বড় শহর দখল করে নেয় এবং কাবুলের কাছাকাছি চলে যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন তাদের নাগরিকদের রাজধানী থেকে সরানোর জন্য হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। কাবুলের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তা হলে সেটি হবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় আঘাত এবং চীনের জন্য সূবর্ণ সুযোগ।
সূত্র : ডেইলি ইনকিলাব

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর