আইনের রক্ষক পুলিশ দেয় ধর্ষনের হুমকি! উত্তর প্রদেশ পুলিশের সীমাহীন বর্বরতা এবং অমানবিকতার লোমহর্ষক কাহিনী

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

newslaundry_2020-12_f5d402b8-85b7-4059-823f-8f6656b45f32_Shamli_Family_AI

নিউজ ডেস্ক : ভারত বর্ষের প্রত্যেক রাজ্যের পুলিশ নিজ নিজ রাজ্য সরকারের হাতের পুতুলের মতো কাজ করে। তাই কখনো রাজ্য সরকারের উদারতায় পুলিশ উদার হয় আবার কখনো রাজ্য সরকারের কল্যাণে উগ্র হয়। আর যদি রাজ্য সরকার এমন কারো হাতে থাকে যে কট্টর হিন্দুত্ববাদের পোস্টার বয় তাহলে মুসলিমদের সঙ্গে পুলিশের আচরণ খুব সহজেই অনুমেয়। আইনের রক্ষক বলা হয় পুলিশ বাহিনীকে। পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে উচ্চপদস্থ নেতা বা মন্ত্রীদের চাপে এমন কিছু করে যা তাদের উর্দিকে শোভা দেয় না তবে “ধর্ষনের হুমকি?!” আইনের রক্ষক পুলিশ যদি সমাজের সব থেকে ঘৃণিত অপরাধের হুমকি দেয় সাধারণ মহিলাকে সেটা সব সীমাকে অতিক্রম করে। কিন্তু এমনি হুমকি দিয়েছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ এক মুসলিম যুবতী নিদা কে। যোগীর পুলিশ নিদা,তার বাবা, মা এবং বোনকে তুলে নিয়ে গিয়ে অকথ্য নির্যাতন করে তাদের দিয়ে জোর করে স্বীকার করাতে চায় তারা অপরিচিত দুই মহিলার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত থাকার কথা।

২০ ই মে তারিখে সকাল বেলা উত্তরপ্রদেশের কাইরানা গ্রামের জগনপুর গ্রামের ক্ষেতে পড়ে থাকতে দেখা যায় দুই অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার মৃতদেহ। বেশ কিছুদিন কেটে গেলেও ঘটনার কোনো কুল কিনারা করতে না পেরে পুলিশ ওপরের চাপ মোকাবিলায় নয়া পরিকল্পনা করে। এই ভয়ংকর পরিকল্পনা হলো এক মুসলিম পরিবারকে বলির পাঠানো বানানো এবং তাদেরকে জোর করে ওই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করানো।
সেই উদ্দেশে ৭ ই জুন তারিখে জনৈক হাসিম আলীর বাড়িতে হানা দিয়ে হাশিম আলী এবং তার ১৮ বছর বয়সী কন্যা নিদাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। ৩৬ ঘণ্টা ধরে চলে জোর করে তাদেরকে না করা অপরাধের স্বীকারোক্তি নেওয়ার চেষ্টা। অকথ্য নির্যাতনের এক পর্যায়ে পুলিশ কর্তা, স্বীকারোক্তি না দিলে নীদাকে ধর্ষনের হুমকি দেন। কিন্তু তারপরও অনড় থাকা নিদা পুলিশ কর্তার চপেটাঘাতে কানের শ্রবণ শক্তি হারিয়ে ফেলে।সেদিনের মতো তাদের প্রচেষ্টায় সফলতা না পেয়ে পুলিশ তাদের ছেড়ে দিলেও তারা হার মানেনি এই ঘৃণ্য খেলায়।

১৮ ই জুলাই আবার হাশিম আলীর বাড়ির সামনে পুলিশ জিপের আওয়াজ। মৃত্যুদূতের আওয়াজের মতো অন্তঃকরণ স্পর্শ করে নিদা, তার বোন সাদাফ এবং তাদের মা ওয়াজিফার। ভয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয় তারা। কিন্তু ঘৃণ্য উদ্দেশ্য হাসিলে বদ্ধপরিকর যোগীর দানবিক পুলিশ তাদেরকে বের করতে দরজা ভেঙ্গে ফেলে নির্দ্বিধায়। তারপর সেখানেই তিন নারীর ওপর শুরু হয় অকথ্য নির্যাতন পুলিশের বেল্ট এবং লাঠি সহযোগে। তারপর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় শামলি থানায়। সেখানে তাদেরকে বিদ্যুতের শক পর্যন্ত দেওয়া হয় উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। কিন্তু তারপরও তারা স্বীকারোক্তি না দিলে তাদের বয়ান রেকর্ড করার ৬ ঘণ্টা পরে তাদের ছাড়া হয়। এর পরও পেশায় স্কুল গাড়ির চালক হাশিম আলীকে থানায় তলব করা হয় ৫ বার। ২২ শে জুলাই রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের রিপোর্টে উঠে আসে তাদের শারীরিক নির্যাতনের নিশ্চিত প্রমাণ। চিকিৎসা নেওয়ার পর থেকে আজও নিজের পায়ে ঠিক ভাবে হাঁটতে পারছেন না হাশিম আলী। এই ভাবে বিনা অপরাধে অত্যাচারীর পদপৃষ্ঠে পিষে অসহায় হয়ে পড়লো এক সুন্দর পরিবার।

ঘটনার স্বীকার অসহায় দরিদ্র মুসলিম পরিবারটি তাদের ওপর হওয়া বর্বরোচিত অত্যাচারের কথা জানিয়ে চিঠি লেখেন মুখ্য মন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কে, পুলিশের ADG কে, জাতীয় মানবধিকার কমিশনে এবং জাতীয় মহিলা কমিশনে। কিন্তু তাদের উপর হওয়া অত্যাচারের কোনো বিচার তারা আজও পাননি।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর