
১৭ই ফেব্রুয়ারি,২০২৫ সকাল ৫:৩৬টায় দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় ৪.০ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল দক্ষিণ দিল্লির ধৌলা কুয়ানের ঝিল পার্ক এলাকায়, যা মাত্র ৫ কিলোমিটার গভীরতায় অবস্থিত ছিল । এই অগভীর গভীরতা এবং স্থানীয় ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাসিন্দারা অস্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী কম্পন অনুভব করেন, যা আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয় ।
সীতারাম বাজারের বাসিন্দা অনিল কুমার জানান, তিনি এর আগে এত তীব্র কম্পন কখনো অনুভব করেননি। ভূমিকম্পের সময় তিনি ও তাঁর পরিবার দ্রুত বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি বলেন, “আমি হৃদরোগী, তাই আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম” ।
সুন্দর লাল, একই এলাকার বাসিন্দা, প্রথমে ভেবেছিলেন ছাদে বানরের শব্দ হচ্ছে। পরে বুঝতে পেরে দৌড়ে বাইরে আসেন। তিনি বলেন, “ভূমিকম্পটি খুব শক্তিশালী ছিল, কিন্তু ভাগ্যক্রমে এটি বেশি সময় স্থায়ী হয়নি” ।
গাজিয়াবাদের এক বাসিন্দা তাঁর বিশাল উচুঁ বাড়ির কথা উল্লেখ করে বলেন, “পুরো বিল্ডিংটি কাঁপছিল। আমরা সবাই আতঙ্কে নিচে ছুটে এসেছিলাম” ।
বুদ্ধ বিহার এলাকার সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, ভূমিকম্পের সময় একটি গাড়ির হর্ন নিজে থেকে বেজে উঠেছে ।
জাতীয় ভূকম্পন বিজ্ঞান কেন্দ্র (এনসিএস) এর পরিচালক ড. ওপি মিশরা ব্যাখ্যা করেন, ভূমিকম্পের অগভীর গভীরতা (৫ কিলোমিটার) এবং দিল্লি-এনসিআর-এর অবস্থান (সিসমিক জোন IV) এর তীব্রতা বাড়িয়েছে । এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের উৎসস্থল ভূত্বক থেকে মাত্র ৫-৬ নীচে হওয়ায় ৪.০ মাত্রার কম্পনও শক্তিশালী মনে হয়েছে।
এছাড়া, ঘনবসতিপূর্ণ শহরে সিসমিক তরঙ্গ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় কম্পন বৃদ্ধি পায় ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক টুইটারে বার্তায় শান্ত থাকতে এবং সম্ভাব্য আফটারশক সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ।
দিল্লি পুলিশ জরুরি সহায়তার জন্য ১১২ হেল্পলাইনে যোগাযোগের অনুরোধ করে ।
আপ নেতা অটিশি এবং অরবিন্দ কেজরিওয়াল সকলের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করেন ।
দিল্লির ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে, বিহারের সিওয়ানে আরেকটি ৪.০ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়। তবে, এনসিএস জানায়, দুটি ঘটনার মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই ।
যদিও এই ভূমিকম্পে কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে এটি দিল্লির ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে ঝুঁকির মাত্রাকে আবারও উন্মোচিত করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অঞ্চলে নিয়মিত ছোট মাত্রার ভূমিকম্প হওয়া স্বাভাবিক, তবে বাসিন্দাদের সতর্কতা ও প্রস্তুতি জরুরি ।