ভারত যে হিন্দু রাষ্ট্র নয়, তা প্রমাণিত হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলেই এ মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
তিনি বলেন, ‘ভারতের সংবিধান যখন ধর্মনিরপেক্ষ, তখন রাজনৈতিকভাবেও আমাদের খোলা মনের হতে হবে। আমি মনে করি না, ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার ধারণাটি যথাযথ ছিল।’
বুধবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে কলকাতায় ফিরে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অমর্ত্য সেন বলেন, ‘আমরা সব সময় আশা করি, প্রতিটি নির্বাচনের পর পরিবর্তন আসবে। বিনা বিচারে মানুষকে কারাগারে ঢোকানো এবং ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান বাড়ার মতো কিছু ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার অনেক চাচা, ভাইকে বিনা বিচারে কারাগারে রাখা হয়েছিল। আমরা আশা করেছিলাম, ভারত স্বাধীন হলে এসব থেকে মুক্তি মিলবে। তবে এসব থামেনি। এর জন্য কংগ্রেসও দায়ী। তারা এটার পরিবর্তন করেনি। কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে এর প্রচলন আরো বেশি।’
অমর্ত্য সেন বলেন, রামমন্দির তৈরি করা সত্ত্বেও ফৈজাবাদে অযোধ্যা আসনে বিজেপি হেরেছে, কারণ দেশের আসল পরিচয়কে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এত টাকা খরচ করে রামমন্দির তৈরি হচ্ছে। ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। ভারত মহাত্মা গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর দেশ। এখানে এমনটা হওয়া উচিত ছিল না। এতে করে ভারতের আসল পরিচয়কে উপেক্ষা করার একটি প্রচেষ্টা চলছে। এটা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।
অমর্ত্য সেন দাবি করেন, নতুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আগেরটির ‘কপি’। সামান্য রদবদল সত্ত্বেও রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাবানরা এখনও শক্তিশালী। মন্ত্রীরা আগের বারের মতো পোর্টফোলিও পেয়েছেন এবারও।
তিনি বলেন, ‘দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য অবহেলিত। কংগ্রেস এবং বামপন্থি নিয়ে আপত্তির কথা তুলতে পারি। তবে তার চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছি এই বর্তমান সরকারের আমলে। আমাদের এই অবস্থার পরিবর্তন করা দরকার।’