বিশেষ প্রতিবেদন :
“হাম হিন্দু জাগানে আয় হ্যায়, হাম হিন্দু জাগ কর জায়েঙ্গে ”; “চামক রহি তালওয়ারিন সব কি, চামক রাহ ত্রিশুল হ্যায়, হিন্দু কো কমজোর না সমঝো, ইয়ে দুশমন কি ভুল হ্যায়”; এবং “হিন্দুস্তান মে রেহনা হো তো ভন্দে মাতরম কেহনা শিখো, আউর আওকত মে রেহনা শিখো”।
এমনই সব গান বাজতে দেখা যাচ্ছিল দিল্লির ময়ূর বিহার অঞ্চলে আরএসএস বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সম্মিলিত উদ্যোগে আয়োজিত এক মিছিলে। এক বিশাল লরির মধ্যে রাখা লাউডস্পিকারে চলছিল এমন সব সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংগীত। পিছে পিছে সেটিকে অনুসরণ করে চলছিল অসংখ্য বাইক রিকশা এবং স্কুটার। করোনা আবহের মাঝেই রাম মন্দিরের নির্মাণের উদ্দেশ্যে অর্থ সংগ্রহের নাম করে আয়োজিত এই মিছিলের অনুমতি দিয়েছে মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর অধীন দিল্লি পুলিশ। ইতিমধ্যেই এমন বহু মিছিলের অনুমতি দিয়েছে তারা। শহরে প্রায় ১০০ টিরও বেশী এমন মিছিল আয়োজিত হয়েছে বা হবে বলে জানানো হয়েছে গেরুয়া দলগুলির তরফ থেকে।
প্রায় প্রতিটি মোটরবাইক সওয়ার ছিল তিনজন করে যুবক, যাদের কারোরই মাথায় হেলমেট এর অস্তিত্ব ছিলনা। এদের বেশিরভাগের হাতে ছিল খোলা তলোয়ার এবং স্কুটার মোটরবাইক এবং রিক্সার সম্মুখভাগে লাগানো ছিল গেরুয়া ধ্বজ। মুসলিম এলাকা দেখলেই জয় শ্রীরাম সহ নানা রকম সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে উঠছিল মিছিল।
মিছিলে প্রান্তিক অশিক্ষিত এবং দরিদ্র মানুষ থেকে শুরু করে অংশ নিয়েছিলেন ধনী ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী, স্কুল এবং কলেজের শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং পড়ুয়ারাও। অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ সরকারি কর্মচারীরাও ই-রিকশায় চেপে অংশ নিয়েছিলেন মিছিলে।
এক ব্যবসায়ী জল ব্যবসায়ী মানবিন্দর সিং সিঙ্গার তার ১৩ বছর বয়সী পুত্র এবং ৮ বছর বয়সে ভাগ্নেকে নিয়ে যোগ দিয়েছেন এই সাম্প্রদায়িক মিছিলে। সিঙ্গারের হাত ধরে থাকা ১৩ বছরের কোমলমতি কিশোরটি স্লোগান দিতে থাকে, “রাম জি কে নাম পে টাং জো আরায়েঙ্গে কসম রাম কি লট নেহি পায়েংগে।”
মিছিলটি এক মন্দির অঞ্চলে গিয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয়। সেই অনুষ্ঠানে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এবং দেশের কোটি কোটি নাগরিকের বিশ্বাসের উপর আঘাত করে যারা ১৯৯২ সালের ৬ ই ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেছিল তাদের সংবর্ধিত করা হয়। অনুষ্ঠানে এক ব্যবসায়ী ২,২০০০০ টাকা দান করেন।