গাজায় চলমান সংঘাতের ফলে মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘাতে প্রায় ৫০,০০০ শিশু বাবা-মা হারিয়ে অনাথ হয়েছে। এর মধ্যে ৪১,০০০ শিশু তাদের পিতাকে, ৬,০০০ শিশু মাকে এবং প্রায় ৩,০০০ শিশু উভয় পিতামাতাকে হারিয়েছে। পাশাপাশি, প্রায় ১৫,০০০ নারী বিধবা হয়েছেন।
ইসরাইলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৫০,০০০ মানুষ, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছে ১,১১,০০০-এরও বেশি মানুষ। এই সংখ্যা শুধু পরিসংখ্যান নয়, এটি সভ্যতার বিরুদ্ধে সংঘটিত এক গভীর অপরাধের চিত্র। গাজার বিধ্বস্ত জনজীবন এবং অনাথ শিশুদের ভয়াবহ ভবিষ্যৎ সভ্যতার অগ্রগতির ওপর গভীর প্রশ্ন তুলেছে।
যদিও জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, তবু এটি গাজার মানুষের দুর্দশা মেটাতে সম্পূর্ণ অপ্রতুল। হাজারো শিশু, যারা নিরাপত্তা ও ভালোবাসার আশ্রয় থেকে বঞ্চিত, তারা কি কখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে? তাদের হারানো শৈশব এবং ভবিষ্যতের দগদগে ক্ষত কি কখনো মুছে যাবে?
এদিকে, ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এই বিচার কি আদৌ সফল হবে? নাকি এই রক্তক্ষয়ী অধ্যায় কেবল ইতিহাসের আরেকটি নিষ্ঠুর গল্প হয়ে থেকে যাবে?
গাজার এই সংকট কেবল একটি অঞ্চল নয়, গোটা সভ্যতার মূল্যবোধ এবং নৈতিকতাকে চ্যালেঞ্জ করছে। সময় এখন একত্র হওয়ার, বিশ্বকে নতুন করে ভাবার। যদি এখনই সক্রিয় পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে সভ্যতার সামনে আরও অন্ধকার সময় আসতে বাধ্য। গাজার শিশুদের কান্না কি আমরা শুনব, নাকি তাদের আর্তনাদ সভ্যতার নামে চিরকাল চাপা পড়ে থাকবে?