
বিনা অনুমোদনে নির্মাণের অজুহাতে গোরখপুর শহরের মেওয়াতিপুর এলাকায় একটি মসজিদ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার। এই নিয়ে একবছরে দুটি মসজিদ ভাগতে চলেছে বিজেপি শাসিত গোরখপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি।
গত বছর জানুয়ারি মাসে কাছাকাছি শতাব্দী প্রাচীন আবু হুরাইরা মসজিদ বুলডোজর দিয়ে ভেঙে দেয় গোরখপুর পৌরসভা ক। সেই সঙ্গে ধ্বংস করা হয় আশেপাশের বেশ কিছু বাড়িঘর ও দোকান।
বর্তমার মসজিদটি মাত্র এক বছর আগে তৈরি হয়েছিল। পুরোনো মসজিদ ভেঙে দেওয়ার পর পুরসভা কর্তৃপক্ষ ও মসজিদ প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে, সরকার ২৪ x ২৬ ফুট আকারের একটি জমি বরাদ্দ করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় গড়ে তোলা হয় নতুন নতুন মসজিদটি।
মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক (মুতাওয়াল্লি) ছিলেন সুহেল আহমেদ, যিনি গত বছর মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর ছেলে শোয়েব আহমেদ মসজিদের পরিচালনার দায়িত্ব নেন।
পুরসভার দাবি, প্রয়োজনীয় নকশা অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারির তারিখের আদেশে, GDA মসজিদের প্রতিনিধি শোয়েব আহমেদকে ১৫ দিনের মধ্যে মসজিদটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। নইলে GDA নিজেই ভেঙে ফেলবে এবং সেই খরচ শোয়েব আহমেদের কাছ থেকে আদায় করা হবে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দিনে, GDA মসজিদের গায়ে ভাঙার আদেশের একটি কপি লাগিয়ে দেয়। এর জবাবে, শোয়েব আহমেদ GDA-এর চেয়ারম্যান কমিশনারের কাছে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।
১৯৬৩ সালে “শেখ ফুন্না বনাম পৌর বোর্ড” নামে একটি আইনি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। চার বছর পর, ১৯ এপ্রিল ১৯৬৭ সালে শেখ ফুন্না ও পৌর বোর্ডের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়, যাতে বলা হয়েছিল যে মসজিদের কোনো ক্ষতি করা হবে না। ২৬ এপ্রিল ১৯৬৭ সালে এই সমঝোতা বেসামরিক আদালত দ্বারা অনুমোদিত হয়।
বর্তমান ভাঙার আদেশ ও আইনি লড়াই
গত বছরের জানুয়ারিতে, পুরকর্তৃপক্ষ দাবি করে যে মসজিদ ও তার আশপাশের জমির মালিকানা তাদের। ৪৬ শতকের (ডেসিমাল) জমির উপর থাকা ১৬টি বাড়ি ও ৩১টি দোকান ভেঙে দেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানে একটি মাল্টি-লেভেল পার্কিং ও কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ চলছে।
শোয়েব আহমেদের অভিযোগ, তার বাবা সুহেল আহমেদ যখন এই অবৈধ ভাঙার বিষয়ে প্রতিবাদ করেন, তখন পুরসভা তাদের ভুল স্বীকার করে নিয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪-এ অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ সভায় নতুন জমি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগে, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এ কুশীনগর জেলার হাটা এলাকায় মাদনী মসজিদও একইভাবে অবৈধ নির্মাণের অজুহাতে ভেঙে ফেলা হয়। সুপ্রিম কোর্ট ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এ কুশীনগরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে আদালতের আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে নোটিশ জারি করে। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে শীর্ষ আদালত একটি আদেশ জারি করেছিল, যাতে বলা হয়েছিল যে পর্যাপ্ত নোটিশ ছাড়া বুলডোজার চালানো যাবে না।
তথ্যসূত্র: The Wire