এনবিটিভি ডেস্কঃ মঙ্গলবার কর্ণাটকের স্কুল-কলেজে হিজাব পরা নিষেধাজ্ঞার রায় দিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট। এর প্রতিবাদে আজ কর্ণাটকে সারা রাজ্য জুড়ে বন্ধের ডাক দিয়েছে বেশ কিছু মুসলিম সংগঠন।বেশ কয়েকদিন আদালত শুনানির পর মঙ্গলবার রাজ্যের উচ্চ আদালত হিজাব নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কর্ণাটক আমীর-ই-শরিয়াত মাওলানা সাগীর আহমেদ রাশাদি একটি ভিডিও বার্তায় এই বন্ধের ডাক দিয়ে বলেন,“ আমরা ভারতীয় সংবিধানের আত্মাকে বিশ্বাস করি, তাই সংবিধানের মূল ভিত্তি রক্ষা করতে হবে। কেননা হিজাবের রায় সংবিধান বহির্ভূত। এই রায়ের প্রতিবাদে সমস্ত মুসলমান, সচেতন ও সুশীল সমাজের মানুষদের বন্ধে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাই।”
মাওলানা সাগীর আহমেদ বলেনে, “স্বেচ্ছায় বনধে অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান করছি। এবং কাউকে তার দোকান বন্ধ করতে বাধ্য না করার জন্য বলব। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে চলবে কর্ণাটক রাজ্যে বন্ধ।”
https://mobile.twitter.com/zoo_bear/status/1503978016317214721
এদিকে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের বন্ধের ডাককে সমর্থন জানিয়েছে ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া এবং অন্যান্য দলগুলিও।
হিজাব পরা পড়ুয়াদের রাষ্ট্রযন্ত্রের সমর্থনে হিন্দুত্ববাদী গুন্ডাদের দ্বারা টার্গেট ও হয়রানির শিকার হয়েছে। এই ধরনের বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে ক্লাসরুম থেকে নিষেধ করা হয়েছে। এই রায় দানের পরেই তাদের অনেকেই হিজাব খুলে ফেলতে বলায় পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দুর্ভাগ্যবশত হিজাব নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হাইকোর্ট হিজাব পরিহিত পড়ুয়াদের শিক্ষা বা ডানপন্থী গুন্ডাদের হাতে তারা যে হয়রানির সম্মুখীন হয় সে বিষয়ে একটুও চিন্তিত নয়।
আদালতের রায়ের নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন। জমিয়তে উলাম-ই-হিন্দ এটিকে “হতাশাজনক” বলে অভিহিত করেছে। জমিয়তের পক্ষ থেকে আরও জানান হয়, এই রায় সরাসরি ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর প্রভাব ফেলবে। আদালত নাগরিকদের বিবেক এবং বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কোন বিষয়ে নির্দেশ দিতে পারে না।
মঙ্গলবার আদালতের পর্যবেক্ষণের পরে জানা যায় যে, ইসলাম ধর্মে মাথা ঢেকে রাখা একটি “অত্যাবশ্যকীয়” অনুশীলন নয়। পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া এই রায়কে কোনভাবে মেনে বলে জানিয়ে দেয় যে, হিজাবকে ইসলামের একটি “অবিচ্ছেদ্য” অংশ বলে অভিহিত করেছে। তাই কোনভাবে আদালতের রায় গ্রহণ যোগ্য নয়।
সূত্রের খব, মঙ্গলবার কর্ণাটক হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে মামলার জরুরী তালিকার জন্য আইনজীবীরা চাপ দেন। পরে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে যে এটি হোলি উৎসবের পরে তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে বিবেচনা করবেন।