
পৃথিবীর ভূত্বকের পরিবর্তনশীল প্রকৃতি কখন যে কোন অঞ্চলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করবে, তা অনুমান করা কঠিন। সম্প্রতি আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল মায়ানমার ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু অংশ। এই স্বল্পতীব্রতার কম্পন নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিল, কতটা ভূমিকম্পপ্রবণ এই অঞ্চল।
শনিবার সকাল ৭টা ৩৮ মিনিট নাগাদ অসমের নগাঁও শহরে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ২.৯। কম্পনের প্রভাব কেবল নগাঁওতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, আশেপাশের এলাকাতেও অনুভূত হয়েছে মৃদু কাঁপুনি। যদিও কম্পনের মাত্রা কম থাকায় প্রাণহানির কোনও খবর পাওয়া যায়নি, তবু হঠাৎ কেঁপে ওঠা মাটির অনুভূতিতে অনেকেই ভয়ে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
কম্পনের মাত্রা বেশি না হওয়ায় আতঙ্ক দ্রুতই কেটে যায়। কিন্তু এমন ঘটনা উত্তরের এই ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের জন্য একেবারেই নতুন নয়। অসম সহ উত্তর-পূর্ব ভারত এমনিতেই একাধিক ভূতাত্ত্বিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত, যা ভূমিকম্পের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলে। তাই মাঝেমধ্যেই এখানে মৃদু থেকে মাঝারি তীব্রতার কম্পন অনুভূত হয়।
ভূতত্ত্ববিদরা জানিয়েছেন, এ ধরনের হালকা কাঁপুনি ভূগর্ভস্থ পরিবর্তনের স্বাভাবিক প্রকাশ। যতক্ষণ এই ধরনের কম্পনের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে, ততক্ষণ তা বড় ধরনের বিপদের ইঙ্গিত বহন করে না। তবে তাদের পরামর্শ, ভূমিকম্পপ্রবণ এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের সবসময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত এবং জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন।
যদিও এইবারের ভূমিকম্পে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি, তবুও এটি একটি সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। প্রকৃতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে হলেও, প্রস্তুতি এবং সচেতনতা দিয়ে তার প্রভাব কিছুটা হলেও হ্রাস করা সম্ভব। উত্তর-পূর্ব ভারতের ভূকম্পনপ্রবণ বাস্তবতাকে মাথায় রেখে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করাই এখন সময়ের দাবি।