নিউজ ডেস্ক এনবিটিভি : ড্রোন প্রযুক্তিতে আয়তনে ছোট দেশ হলেও ভারতের তুলনায় অনেক এগিয়ে পাকিস্তান। তারা নিজেদের দেশেই দেশীয় প্রযুক্তিতে বিভিন্ন নজরদারি ড্রোন তৈরি করছে বহু আগে থেকেই। কয়েক বছর আগে তারা তৈরি করেছে সশস্ত্র ড্রোন, যা তাদেরকে জায়গা করে দিয়েছে বিশ্বের অতি উন্নত অস্ত্র নির্মাকারি দেশগুলোর তালিকায়। সেই ড্রোনটির নাম দিয়েছে “বুরাক”। এই ড্রোনটি অত্যাধুনিক গাইডেড মিসাইল, স্মার্ট বোমা এবং লেজার বোমা ছুঁড়তে সক্ষম। ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার এটির পরীক্ষামূলক পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। কিন্তু বিপুল সামরিক বাজেট বরাদ্দ থাকার পরও ভারত এখনও তৈরি করতে পারেনি কোন সশস্ত্র ড্রোন। ভারত এখনও নজরদারি ড্রোন রুস্তম ২ তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সশস্ত্র ড্রোনের এই অভাব পূরণে ভারত বহুবার আমেরিকার অ্যাভেঞ্জার প্রিডেটর ড্রোন ক্রয়ের চেষ্টা করেছে কিন্তু আমেরিকার তরফ থেকে পাওয়া যায়নি উপযুক্ত সাড়া। এখন ভারত চেষ্টা করছে ইজরায়েলের সশস্ত্র ড্রোন হেরণ ক্রয়ের তবে তাও সময় সাপেক্ষ।
এদিকে ভারতের সঙ্গে লাদাখ নিয়ে চীনের সীমান্ত বিবাদের মাঝেই পাকিস্তানকে পঞ্চাশটি সশস্ত্র অত্যাধুনিক ড্রোন দিতে চলেছে চীন। উইং লং টু নামক বিশ্বের এই অত্যাধুনিক ড্রোনটি এবার যুক্ত হতে যাচ্ছে পাকিস্তানের অস্ত্র ভাণ্ডারে। এই ড্রোনটি পাকিস্তানের হাতে আসার পর ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং সামরিক স্থাপনা গুলি পাকিস্তানের অনেক সহজ টার্গেটে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছে সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস। চীনা এই ড্রোনটিকে আমেরিকার অত্যাধুনিক অ্যাভেঞ্জার এর সমতুল্য বলে মনে করা হয়।
প্রায় ১১ মিটার লম্বা এবং ২০ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট বৃহদাকার এই ড্রোনটি ছুড়তে পারে বহু অত্যাধুনিক মিসাইল। এই ড্রোনটি আকাশে উড়তে পারবে একটানা ৩০ ঘন্টা। চেংডু এয়ারক্রাফট ইন্ডাস্ট্রিজ গ্রুপের তৈরি এই ড্রোনটি সর্বোচ্চ গতিবেগ ২৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় এবং এটির পাল্লা ৪০০০ কিলোমিটার। এটি হাতে পাওয়ার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী সীমান্তের আশেপাশে নজরদারি, গুপ্তচরবৃত্তি, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং শত্রু দেশের সামরিক স্থাপনা রুপোর যুদ্ধকালীন সময়ে সশস্ত্র মিসাইল হামলা এবং বোমা বর্ষণ করতে পারবে। চীনের তরফ থেকে জরুরিকালীন ভাবে এই ড্রোনগুলো পাকিস্তানকে সরবরাহ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে।
এই খবর রীতিমতো উদ্বেগ বাড়িয়েছে মোদি সরকারের ওপর। ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে এস ৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয়ের সময়ই অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞ পাকিস্তানের উইং লং টু ড্রোনটি ক্রয়ের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছিলেন আজ সেই সম্ভাবনা বাস্তবতায় রূপান্তরিত হল। বহু পরিমাণ এই অত্যাধুনিক ড্রোন পাকিস্তানের হাতে থাকলে ভারতের এই অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তার গুরুত্ব এবং কার্যকারিতা অনেকটাই হারাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। এখন পাকিস্তান রাশিয়ার এই অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটা জবাব সন্ধান করে নিল যার ফলে ভারত যে সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের চেষ্টা করেছিল এই অঞ্চলে তা অধরা থেকে যাবে এবারও।