গুজরাটে ইফতারের থালায় লাথি, নামাজরত ব্যক্তিদের টেনে হিচড়ে নিয়ে গেল পুলিশ

এনবিটিভি ডেস্কঃ করোনা অবহে মুসলিমরা সবচেয়ে নিপীড়ন হচ্ছে এমনটাই জানিয়েছিল রাষ্ট্রসংঘের (United Nations ) মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এরই মধ্যে বিজেপি শাষিত গুজরাটে ইফতারের থালায় লাথি, নামাজরত ব্যক্তিদের টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়ার মত পুলিশের চরম বর্বতার অভিযোগ উঠলো।

গুজরাটের আমেদাবাদের কাছে শাহপুর এলাকাটি মূলত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা। সুত্রে খবর লক ডাউন চলাকালীন যেখানে করােনা সংক্রমণের জন্য কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ৮ মে শাহপুর পুলিশ সেখানকার স্থানীয় মানুষদের হেনস্থা করে বলে অভিযােগ উঠেছে। লকডাউন রক্ষা করতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। তবে এই ঘটনার পিছনে লকডাউনের পাশাপাশি ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ আছে বলে মনে
করছে ওয়াকিফহাল মহল।

সূত্র জানাগেছে, হিংসার ঘটনাটি ঘটে যখন দুই ব্যক্তি লকডাউন চলাকালীন বাড়ির বাইরে বসেছিলেন। পুলিশ ওই এলাকায় টহল দেবার সময় তাদেরকে বাড়ির ভেতরে যেতে বলে। পুলিশের অভিযােগ, এরপরই উত্তেজিত জনতা
সেখানে জড়াে হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে। তখন পুলিশ তাদের ছত্র করাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছােড়ে ও লাঠিচার্জ করে। অন্যদিকে, স্থানীয়দের অভিযােগ, পুলিশ মহিলাদের মারধর করে। এমনকী বয়স্ক মানুষ ও
শিশুরাও পুলিশি নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। ঘটনার পরে পুলিশই উলটে ২৮ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে ৬২ বছর বয়সের এক বৃদ্ধও রয়েছেন। তিনি একা পায়ে হেঁটে বাইরে বেরােতে পর্যন্ত পারেন না। তিনি কীভাবে
লকডাউন ভাঙলেন, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ঘটনার দিনের
বর্ণনা দিতে গিয়ে ৫১ বছরের রাজিয়া বানু জানান, পুলিশ কাউকে ইফতার
করতে দেয়নি। একটু পানিও পান করতে দেয়নি। রমযান মাসে মানুষ
বিশ্রাম নেয় বা ঘুমােয়। কিন্তু পুলিশ
যেকোনও সময় এসে তল্লাশি শুরু
করছে। জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ১২
বছরের এক অবুঝ বালককে ওর
প্রত্যক্ষদর্শী বানিয়ে মানুষজনকে
গ্রেফতার করছে।

শাহপুরের আরেক বাসিন্দা ফারজানা
বানু জানাচ্ছেন, তার পুত্র যখন নামাজ পড়ছিল তখন ৭-৮ জন পুলিশ দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে পড়ে। দু-তিন জন পুলিশের পােশাক পরে ছিল, বাকিরা সাদা পােশাকে ছিল। তারা ফারজানাকে
ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং প্রস্তুত করা
ইফতারসামগ্রী লাথি মেরে ছুড়ে ফেলে।
জায়নামাযে বুট পরে উঠে পড়ে এবং তার পুত্রকে টেনে-হিচড়ে নিয়ে যায়। পুত্র একজন কুরআনের হাফিজ। তার স্বামীকেও পুলিশ তুলে নিয়ে যায়।
সেদিন ইফতার করার জন্য তার কাছে আর কিছুই ছিল না বলে জানাচ্ছেন ফারজানা।

Latest articles

Related articles