
ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্প্রতি ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪-এ তাঁর সম্মতি জানিয়েছেন। এই বিলটি সংসদের উভয় কক্ষে তুমুল আলোচনা ও বিতর্কের পর পাস হয়েছে। রাজ্যসভায় প্রায় ১৭ ঘণ্টা ধরে চলা আলোচনার পর শুক্রবার ভোরে বিলটি ১২৮টি ভোটে পাস হয়, যেখানে ৯৫ জন সাংসদ এর বিরোধিতা করেন। এর আগে সপ্তাহের শুরুতে লোকসভায় ১৩ ঘণ্টার দীর্ঘ বিতর্কের পর এই বিল অনুমোদিত হয়েছিল। মাননীয় রাষ্ট্রপতি মহাশয়া এই বিতর্কীত বিলটিতে সই করে আইন হিসাবে মান্যতা দিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ওয়াকফ ব্যবস্থায় বহুদিন ধরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতি ছিল। তিনি আরও জানান, এই নতুন আইন জনগণের অধিকার রক্ষা করার পাশাপাশি ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বাড়িয়ে তুলবে।

মুসলিম সংগঠনগুলি বলছে, এই আইনের মাধ্যমে কেন্দ্র ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণে বৈধতা পেতে চাইছে, যা সম্প্রদায়ের স্বায়ত্তশাসনের উপর আঘাত। বিরোধী দলগুলি সংসদে ও রাস্তায় আইনটির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ইস্যু আগামী নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে। আইনগত লড়াইয়ের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে মামলাগুলির শুনানির জন্য এখন তদারকি করা হচ্ছে। আইনটি স্থগিত করার দাবি জানিয়ে পিটিশনগুলিতে বলা হয়েছে, “ওয়াকফ ব্যবস্থাপনা মুসলিম ব্যক্তিগত আইনের অংশ, যা রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ থেকে সুরক্ষিত।” সরকারের পক্ষ থেকে আইনজীবীরা এটিকে “প্রশাসনিক সংস্কার” বলে উল্লেখ করলেও বিতর্কের অবসান এখন আদালতের হাতে।
এর আগেও বিতর্কীত কৃষি বিলকে আইন হিসাবে অনুমোদন দেওয়ার পরেও আন্দোলনের চাপে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রিয় সরকার। ওয়াকফ নিয়েও কি একই ঘটনা ঘটবে? এর উত্তর একমাত্র সময়ই দিতে পারবে।