ফুটবল ইতিহাসের কালো দিনে পালন করছে ‘খেলা হবে দিবস’, মমতা সরকারকে আক্রমণ নওশাদের

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG-20210820-WA0183

প্রেস রিলিজ*

পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন পর্বের পর প্রায় সাড়ে তিনমাস অতিবাহিত। কিন্তু ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (ISF) গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে, নির্বাচন পরবর্তী হিংসার কোন বিরাম নেই। বহু জায়গায় আইএসএফ কর্মীদের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, মারধর করা হচ্ছে, জরিমানা করা হচ্ছে। এমনকি, জোর করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করানোর চেষ্টা চলছে।

 

গত ১৫ আগস্ট ভাঙড়ের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে দলের উদ্যোগে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেখানে কয়েকটি জায়গায় জোর করে অনুষ্ঠান বানচাল করে দেওয়া হয়। নলমুড়ি প্রাণগঞ্জে জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে, পদদলিত করে অপমান করা হয়। যাবতীয় অঙ্গ সরঞ্জাম ভেঙে ফেলা হয়। এখানে ২৪ টি কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের কর্মীদের বেধড়ক মারধর করে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বাধা দেয়। একই ঘটনা ঘটেছে ভাঙ্গড়ের জাগুলগাছি অঞ্চলে, সেখানেও জাতীয় সংগীত পরিবেশন কালীন সময়ে হামলা চালায় তৃণমূল দুষ্কৃতীরা,জাতীয় সংগীত বন্ধ করে দেওয়া হয় মাঝপথেই।

গতকাল কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করব, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় অভিযুক্তদের শাস্তি হবে ও আক্রান্তরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন।

আমরা লক্ষ্য করছি, কোভিডের বিধিনিষেধ ও মহামারী আইনের দোহাই দিয়ে আমাদের কোন সভা-সমিতি, প্রতিবাদ কর্মসূচি করতে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু রাজ্য সরকারের বকলমে তৃণমূল কংগ্রেস দিব্যি দলীয় কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন, গত ৯ই আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস আমরা উদযাপন করতে পারিনি। কোনও দলই পারেনি। অথচ, ঝাড়গ্রামে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সাড়ম্বরে বড় জমায়েত করেছেন।

সম্প্রতি কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করা হচ্ছে। মইদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের কাছে চালানের ঘটনা এটির প্রমাণ। বিরোধী মত দমন করাই মূল লক্ষ্য বোঝা যাচ্ছে। মইদুল ইসলাম শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের রাজ্য সম্পাদক। রাজ্যের শিক্ষকদের সঙ্গে বেতন বৈরিতা ও বৈষম্য নিয়ে আন্দোলনের প্রথম সারিতে তিনি আছেন। বিশেষ করে এসএসকে এমএসকে পার্শ্ব শিক্ষক ও অন্যান্য নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে তাঁর নেতৃত্বে শিক্ষক মুক্তমঞ্চ আন্দোলন করছে ও রাজ্য সরকার অনেক সময় তাদের দাবী-দাওয়া মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু এর খেসারত তাঁকে দিতে হচ্ছে। তাঁকে অন্যায়ভাবে বদলি করা হয়েছে।

 

মইদুল ইসলাম সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচনে মগরাহাট পশ্চিম থেকে আইএসএফ প্রার্থীও ছিলেন। তিনি এখন দলের অন্যতম মুখপাত্র। আমরা মনে করি মইদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে আইএসএফ নেতৃত্বকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অনৈতিক ও অগণতান্ত্রিকভাবে পুলিশ একজন শিক্ষকের সঙ্গে ক্রিমিনালের মতন আচরণ করে ঝাড়গ্রাম পাঠিয়ে দেয়। আমরা গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

বাংলার আপামর ক্রীড়াপ্রেমী মানুষের কাছে ১৬ই আগস্ট একটি অতি শোকের দিন। ১৯৮০ সালে এই দিনে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের মধ্যে খেলাকে কেন্দ্র করে মাঠে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং তার আঁচ গ্যালারিতে ছড়িয়ে পড়ে। পদপিষ্ট হয়ে ১৬ জন মারা যান। প্রতি বছর এদিনটি ‘ফুটবল প্রেমী দিবস’ হিসেবে পালন হয়ে আসছে। কিন্তু এইবছরই দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী দিনটি ‘খেলা হবে’ বলে দিনটি পালন করলেন। সেখানে বিভিন্ন স্থানে তাঁর দলের সমর্থকরা গান-বাজনা বাজিয়ে, নাচানাচি করে বেলেল্লাপনা করলেন। সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে গিয়ে দিনটির তাৎপর্য নষ্ট হল, বলাই বাহুল্য।

এটা আজ স্পষ্ট যে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। গণতন্ত্রও তলানিতে। খোদ দলের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরিও আক্রান্ত হচ্ছেন দলের দুষ্কৃতীদের দ্বারা। তাঁর এই হাল হলে বিরোধীদের কি অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়।

 

এদিন ক্যালকাটা প্রেস ক্লাবে উপস্থিত ছিলেন – পীরজাদা নওসাদ সিদ্দিকী (বিধায়ক,ভাঙ্গড় বিধানসভা ও চেয়ারম্যান আইএসএফ), শামসুর আলী মল্লিক (কার্যকারি সভাপতি, আইএসএফ),  বিশ্বজিৎ মাইতি (রাজ্য সম্পাদক,আইএসএফ), সৌমিত্র ঘোষ দস্তিদার (যুগ্ম মুখপাত্র,আইএসএফ), মইদুল ইসলাম (যুগ্ম মুখপাত্র,আইএসএফ), নাসির উদ্দিন মীর (অফিস সম্পাদক ,আইএসএফ), ফাইসাল খান (সদস্য, রাজ্য কমিটি), আশিফ ইকবাল, সদস্য, রাজ্য কমিটি, মোহাঃ আলি কালামুল্লাহ, সহঃ সম্পাদক, রাজ্য কমিটি।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর