জাতীয় স্তরে বাংলা চলচিত্রের মুখ উজ্জ্বল করলেন পিছিয়ে পড়া আদিবাসী সমাজের মেয়ে ডগর টুডু

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

WhatsApp Image 2022-07-06 at 11.43.43 AM

~ঝুমুর রয়

সিনেমার একটি দৃশ্যে ডগর টুডু

পদবীর টান বড়ই টান। আজ ডগর টুডু না হয়ে যদি ডগর মুখার্জি হতো তাহলে কোলকাতার মূলধারার টিভি চ্যানেল গুলি তাকে নিয়ে পাঁচ মাস ব্যপী প্রচারণা চালাতো। এভাবে ব্রাহ্মণ্যবাদ সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ গুলিকে যুগ যুগ ধরে শোষণ করে আসছে।

জাতীয় স্তরে বাংলা চলচিত্রের মুখ উজ্জ্বল করলেন পিছিয়ে পড়া আদিবাসী সমাজের মেয়ে ডগর টুডু। ১২ তম দাদাসাহেব ফালকে ২০২২ চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এত বড় খবরটি কয়জনে জানে!

ডাগর টুডু ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার মানবাজারে ১৮ মে, ১৯৯৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন সাঁওতালি অভিনেত্রী, সাঁওতালি এবং বাংলা ভাষার সঙ্গীতের গায়ক ও গীতিকার। তিনি পাশ্চাত্য সঙ্গীত, ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং সাঁওতালি ঐতিহ্যবাহী গানে অভিনয় করেছিলেন। তার আসল নাম ডাগরমণি টুডু। তিনি রানীবাঁধ গার্লস হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন।মাত্র ২২ বছর বয়সেই বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ডগর টুডু। অভিনয়ের পাশাপাশি ডগর একজন প্রতিষ্ঠিত গায়িকাও। সাঁওতালী বিনোদন জগতে তিনি যথেষ্ট পরিচিত।

পরিচালক পল্লব রায়ের হাত ধরে মুক্তি পায় সাঁওতালি ছবি ‘আশা’। উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জের দক্ষিণ সোহারই গ্রামের একটি অনাথ আশ্রমের প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে আশা নামের এই সাঁওতালি চলচ্চিত্রটি। ছবিতে রয়েছে একজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন আদিবাসী মেয়ের অসম জীবন যুদ্ধের লড়াই। সমাজের চোখে যার অস্তিত্ব মূল্যহীন। হাজার প্রতিকূলতা উপেক্ষা তার জীবনের সফলতার গল্পই ‘আশা’। গত ২৯ এপ্রিল ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল ‘আশা’। সেখানে ডগরের অভিনয় দেখে মুগ্ধ হন সকলে। এই ছবিতে অভিনয়ের সূত্রেই সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন ডগর টুডু।

অসাধারণ প্রতিভা, সুন্দর গান করে। রবীন্দ্র সঙ্গীত নিজেই সাঁওতালি ভাষায় অনুবাদ করেন ডগর। আধুনিক যুগেও সমাজের বিভিন্ন স্তরের আদিবাসী ছেলেমেয়েরা আজও পিছিয়ে রয়েছে। তাই তো এত বড় পুরস্কার পাওয়ার বেশ কিছু সময় পরেও মূলধারার সংবাদমাধ্যম গুলির মধ্যে তেমন উৎসাহ চোখে পড়েনি ডগরকে নিয়ে।আর ব্রাহ্মণ্যবাদী টিভি মিডিয়া আদিবাসী ডগরকে নিয়ে কেনই বা প্রতিবেদন প্রচার করবে- তারা যে মনের মাঝে হিংসা পুষে রাখে।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর