

“দাদা! আমি বাঁচতে চাই।” ১৯৬০ সালে মুক্তি পায় ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ছবি ‘মেঘে ঢাকা তারা’। সিনেমার শেষ সিকুয়েন্সে প্রোটাগনিষ্টের বেঁচে থাকার উদগ্র বাসনা এবং আর্তনাদ দেখে চোখের জল ফেলেছিল দর্শকরা। সিনেমার প্রোটাগনিষ্টের মত বাংলার প্রতিটি ঘরে রোগগ্রস্ত মানুষেরা, সরকারের কাছে আজ একটাই দাবি করছে, “আমি বাঁচতে চাই।”

স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে আবারও সমালোচনার মুখে রাজ্য। কলকাতা হাইকোর্টের তীব্র ভৎসনায় মুখ পুড়লো রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের। কিছুদিন ধরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুয়াপুর এলাকার একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে নিয়ে বহু সাধারন মানুষের অভিযোগ উঠে আসছে। এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল দশা সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি টি এস শিবগণম বলেন, “আপনারা পার্ক স্ট্রিটের আলোকসজ্জা নিয়ে গর্ব করেন! অথচ এই হাসপাতালের পাইপ ভেঙে গিয়েছে, বাড়ি ভগ্নপ্রায়, গোটা চত্বর অপরিচ্ছন্ন। কেন মানুষকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধরতে হবে?” চিকিৎসক মহলের একাংশ মনে করছেন দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসা করতে যাওয়া একাধিক সাধারণ মানুষ করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে মূলত ব্যবহার করে থাকেন। তাই সুনামি চলাকালীন বিচারপতি এই প্রসঙ্গটিকে উল্লেখ করেছেন।

শুনানি চলাকালীন কেবল হাসপাতাল প্রসঙ্গে ব্যাপারটা সীমিত থাকেনি। গোটা রাজ্যে সমগ্র স্বাস্থ্যব্যবস্থার বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, চন্দননগরে সুপার স্পেশালিটি হসপিটালের অভাব রয়েছে। পুরুলিয়া, ও মুর্শিদাবাদে কার্যত বিধ্বস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। ঐদিন বিচারপতি সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভৎসনা করে জানান, “হাসপাতাল তৈরি না করলে, চিকিৎসার সুবিধা না দিলে মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে যেতে বাধ্য হবেই। আপনারা ভোট নিয়ে চিন্তা করছেন, ভোটার নিয়ে নয়।”

দিনের শেষে কি হবে বাংলার মা, মাটি, মানুষের পরিণতি? স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সরকারি গাফিলতিতে কি অকালে প্রাণ হারাবে বাংলার সাধারণ মানুষ? নানান মহলে উঠছে প্রশ্ন।