
বিস্তারিত প্রতিবেদন:
মণিপুরের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে নতুন করে হিংসার আগুন ছড়াল কামজং জেলার গামপাল ও হাইয়াং গ্রামে। বুধবার সকাল ৯টার দিকে অস্ত্রধারী অজ্ঞাতপরিচয় দল কুকি সম্প্রদায়ের একাধিক বাড়িতে আগুন লাগায়। স্থানীয় প্রশাসনের তথ্যমতে, ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত এসব গ্রামে এখনও পর্যন্ত প্রাণহানির খবর নেই। তবে সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি স্থানীয় জনজীবন বিপর্যস্ত।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কামজং জেলার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট “ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (BNSS)”-এর ধারা ১৬৩(১) প্রয়োগ করে গামপাল ও হাইয়াং গ্রামের মানুষদের ঘরের বাইরে বেরোনোর উপরে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি এবং শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে—এমন যেকোনো সমাবেশ বা কার্যকলাপ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কুকি ইনপি মণিপুর, কুকি স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনসহ বিভিন্ন কুকি-জো গোষ্ঠী এই ঘটনাকে “সন্ত্রাসী হামলা” আখ্যা দিয়ে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ দাবি করেছে। তাদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে:

- ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর পুনর্নির্মাণ ও পরিবারগুলোর পূর্ণ পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
- নিরপেক্ষ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করে স্থানীয়দের সুরক্ষা দিতে হবে।
- খাদ্য, চিকিৎসা ও আশ্রয়সহ জরুরি সহায়তা পৌঁছানো হোক।
মণিপুরে গত বছরের মে থেকে মেইতেই ও কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত চলছে, যাতে এখন পর্যন্ত ২০০-র বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। শান্তি আলোচনা চললেও সম্প্রতি কামজং জেলায় এই হামলায় আবারও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির ইঙ্গিত মিলেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই অঞ্চলটি আগে তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ ছিল, কিন্তু বর্তমান ঘটনা সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে নতুন করে বিভেদের আশঙ্কা জাগিয়েছে।

জাতিগত সংঘাত প্রশমনে জরুরি হস্তক্ষেপের করার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সময়মতো নিষ্পত্তি না হলে এই সংঘাত আন্তঃরাজ্য বা আন্তর্জাতিক মাত্রা নিতে পারে, বিশেষত মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় জটিলতা আরও বাড়তে পারে।