
২০১৬ সালের নিয়োগ দুর্নীতিতে চাঞ্চল্যকর নথিপত্র : সুপারিশের পেছনে বিজেপির রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতানেত্রী!
গত শুক্রবার আদালতে সিবিআই কিছু নথি জমা দেয়, যা সামনে আনে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে কর্মী নিয়োগে সুপারিশ পাঠানোর প্রক্রিয়া ও এর সাথে জড়িত ব্যক্তিদের নাম। বিকাশ ভবনের তল্লাশি থেকে উদ্ধার হওয়া এই নথিপত্রে দেখা যায়, সুপারিশপত্রের তালিকায় উভয় পক্ষের – তৃণমূল ও বিজেপি – নেতানেত্রীদের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নথিতে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের নিকট মোট ৩২১টি সুপারিশপত্র পাঠানো হয়েছিল, যার মধ্যে ১৩০-এর বেশি চাকরি নিশ্চিত হয়। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই নামের তালিকা প্রেরণ করতেন। নথিতে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী, বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ চারজন ব্যক্তির চাকরির সুপারিশ করেছিলেন। অপরদিকে, তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী তার সময়ে ২০ জনের সুপারিশ পাঠানোর অভিযোগ প্রস্তাবিত হয়েছে। এছাড়া, শিউলি সাহা ও মমতাবালা ঠাকুরের তরফ থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুপারিশ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সিবিআই সূত্রে জানা যায়, এই নথি প্রাপ্তির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় এজেন্সি বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে। আদালতে জমা দেওয়া নথিপত্র থেকেই তথ্য ফাঁস হয়েছে, যা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অবৈধ প্রভাব ও রাজনৈতিক আঘাতের অভিযোগকে তীব্র করে তুলেছে।
নথি নিয়ে প্রতিক্রিয়ায়, বিজেপি নেতা দিব্যেন্দু অধিকারী “নো কমেন্টস” বলে বক্তব্য রেখেছেন। অন্যদিকে, বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ বলেন, “যখন সিবিআই আমার নাম পায়, তখন আমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা উচিত ছিল – আমি একবারও ডাকনি। এসপি-র সময় হাজার হাজার মানুষের উপকার করেছি এবং সমস্ত সুপারিশ আইনের আওতায় থেকে করেছি।”
এদিকে, তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর স্পষ্ট করে বলেছিলেন, “আমি এমন কোন কাজ কখনও করিনি।” আর রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যুক্তি দেন, “যাঁদের সুপারিশে বেআইনি নিয়োগ হয়েছে, তার মধ্যে কোনো বিজেপির লোক নেই।”
এই নথিপত্র ও উত্থাপিত তথ্য সংশ্লিষ্ট নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় তদন্তের নতুন দিক উন্মোচন করেছে। বিচার প্রক্রিয়ায় এই নথির গুরুত্ব পরবর্তী তদন্ত ও প্রমাণের ভিত্তিতে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।