
মুর্শিদাবাদ জেলায় ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার মধ্যেই তৃনমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা তীব্র হয়েছে। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ইউসুফ খানকে সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট ঘিরে বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে চায়ের কাপ সহ শান্তিপূর্ণ মুহূর্তের ছবি শেয়ার করে তিনি লেখেন, “সুন্দর দুপুর, দারুণ চা ও মনোরম পরিবেশ…”। তবে, এই পোস্টের নিচে অনেক ব্যবহারকারী তার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ, সংকটের সময় শান্তি বজায় রাখতে সাংসদদের সরব হওয়া উচিত ছিল, যা এখনও লক্ষ্য করা যায়নি। একইভাবে, মুর্শিদাবাদ লোকসভার তৃণমূল সাংসদ আবু তাহেরও জনসমক্ষে আসেননি বলে জানা গেছে।
এদিকে, সুতি-২ ব্লক ও সামশেরগঞ্জ এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সামরিক বাহিনী মোতায়েন ও অতি দ্রুত সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবি জানিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা বামফ্রন্ট। শনিবার এক প্রেস বিবৃতিতে জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক ও সিপিআই(এম)-এর জেলা সম্পাদক প্রশাসনের গতিহীনতার তীব্র সমালোচনা করেন। তাদের বক্তব্য, সময়মতো হস্তক্ষেপ না করায় পুলিশ প্রশাসন “দর্শকের ভূমিকা” পালন করেছে, যা সহিংসতা রোধে ব্যর্থতারই ইঙ্গিত দেয়। এছাড়াও, সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে নিহত তিন ব্যক্তির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে জরুরি পদক্ষেপের অনুরোধ জানানো হয়।
বামফ্রন্টের মতে, রাজ্য সরকারের নীতিগত ব্যর্থতা, বিশেষত ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ার ঘটনা ও ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ, তৃণমূলকে জনসমর্থন হারানোর ভয়ে বিভাজনমূলক রাজনীতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের অভিযোগ, বিজেপি ও তৃণমূলের দ্বিমুখী রাজনৈতিক স্বার্থে প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা ইন্ধন যুগিয়েছে। পাশাপাশি, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের সমন্বয়হীনতাকেও দায়ী করা হয়েছে।
এলাকায় শান্তি ফেরাতে মুর্শিদাবাদ প্রশাসন ২৩ জন দক্ষ পুলিশ কর্মীকে বিশেষ দায়িত্বে নিয়োগ করেছে বলে জানানো হয়েছে। তবে, স্থানীয় বাসিন্দা ও সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে আরও জোরালো ব্যবস্থা ও দ্রুত পদক্ষেপের দাবি উঠছে। উত্তপ্ত পরিবেশে সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সুসম্পর্ক ও সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান জানানো হয়েছে সর্বস্তরে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে মুর্শিদাবাদের সাধারণ মানুষ শান্তি কামনা করলেও রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরে যে সমাধান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তা জলের মত পরিষ্কার।