সাইফুল্লা লস্কর : প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে তুরস্ক পৃথিবীর দ্রুততম বিকাশশীল দেশগুলোর মধ্যে অগ্রগণ্য। আবার মনুষ্যবিহীন ড্রোন উৎপাদনে তাদের জুড়ি মেলা শক্ত। তাদের তৈরি ড্রোনের কার্যকারিতা দেখা গিয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত হওয়া আর্মেনিয়া আজারবাইজানের যুদ্ধে। এবার তুরস্ক আরো এক নয়া যুদ্ধাস্ত্র তৈরিতে সফলতা লাভ করলো। গতকাল তুরস্ক তৈরি করলো তাদের প্রথম মনুষ্যবিহীন সশস্ত্র ভাসমান নৌযানের প্রোটোটাইপ। এই আবিষ্কারের ফলে ভূমধ্যসাগর এবং কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে তুরস্কের নিয়ন্ত্রণ আরো বৃদ্ধি পাবে।
আরেস শিপিয়ার্ড এবং মেটেকসান ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি এর যৌথ উদ্যোগে প্রস্তুত করা হয়েছে এই অত্যাধুনিক নৌযানটি। এমন নৌযান তুরস্ক ছাড়া পৃথিবীর খুব কম দেশ অর্জন করেছে। তুরস্কের এই নৌযানটি প্রায় ৪০০ কিমি দূরে থেকে কোনো চলমান বা স্থির প্লাটফর্ম থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। সেটা কোনো ফ্রিগেট, বিমানবাহী রণতরী, ডেস্ট্রয়ার বা কোনো স্থলভাগে অবস্থিত কমান্ড সেন্টার থেকে। তিন বছর থেকে গবেষণার ফলে তৈরি হওয়া এই যানটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬৫ কিমি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সাহায্যে কাজ করা যানটিতে নাইট ভিশন ক্যামেরা থাকবে এবং এটিতে এনক্রিপ্টেড যোগাযোগ ব্যাবস্থা ইনস্টল করা হয়েছে। যার ফলে শত্রু পক্ষ এই যানটিকে সহজে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবে না।
তুরস্কের স্থলভাগের খুব কাছাকাছি গ্রিসের নিয়ন্ত্রণাধীন অনেক দ্বীপ আছে যেগুলোর ওপর নজরদারিতে তুরস্কের সুবিধা হবে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের সামরিক বিশেষজ্ঞরা। এজিয়ান সাগরে ও তুরস্কের নৌবাহিনীকে সাহায্য করতে পারবে এই নৌযান।
এটি তুরস্কের উলাক সিরিজের প্রথম যুদ্ধাস্ত্র। এই মাসের শেষের দিকে এটিকে সমুদ্রে নামানো হবে বলে জানা গিয়েছে। এরমধ্যে এই নৌ ড্রোনের অস্ত্র ব্যাবস্থার পরীক্ষা করা হবে গাইডেড মিসাইল এর সাহায্যে। এটি তৈরি করেছে তুরস্কের আরেক যুদ্ধ নির্মাতা রকেটসন।
এটি বিভিন্ন রকম মিশনে ব্যাবহার করা যাবে যেমন ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার এবং জ্যামিং এর কাজে। এটিকে এর ক্ষুদ্র রাডার সিগনেচারের জন্য শত্রু পক্ষ চিহ্নিত করতে পারবে না। এটির পেলোড বহনের ক্ষমতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করা হবে বলে জানানো হয়েছে। নজরদারি, গোপনে তথ্য সংগ্রহ, কোনো কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদের নিরাপত্তা প্রদান এবং কোনো অগ্রগামী বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই নৌযানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।